বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj

পশ্চিমা হুমকি ঠেকাতে কূটনৈতিক সমন্বয়ে রাশিয়া, চীন ও ইরান

পশ্চিমা হুমকি ঠেকাতে কূটনৈতিক সমন্বয়ে রাশিয়া, চীন ও ইরান
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

সম্প্রতি তেহরানে ইরান, রাশিয়া ও চীনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে পারমাণবিক চুক্তি (JCPOA), পশ্চিমা প্রভাব ও নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় ঘনিষ্ঠ সমন্বয় এবং সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এই আলোচনায় চীন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা একমত পোষণ করেন যে, পশ্চিমা বিশ্বের একপাক্ষিক চাপ ও হুমকির মুখে পারস্পরিক সমর্থন এবং কূটনৈতিক ঐক্য বজায় রাখা অপরিহার্য।

বৈঠকে ইরানের আইন ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি বলেন, “যদি ইউরোপীয় দেশগুলো আবারও জাতিসংঘের মাধ্যমে ‘স্ন্যাপব্যাক’ নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করে, তবে সেটি হবে পুরোপুরি অবৈধ, যার কোনো আন্তর্জাতিক আইনগত বা নৈতিক ভিত্তি নেই।”

তিনি বলেন, ‘এ ব্যবস্থার কোনো বৈধ ভিত্তি নেই। যারা চুক্তির প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি, তারা এটি সক্রিয় করার অধিকার হারিয়েছে—বিশেষত ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর’।

গারিবাবাদি আরও জানান, ত্রিপাক্ষিক এই বৈঠকটি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ভিত্তি তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে তিনি পশ্চিমা কূটনীতির ‘বলপ্রয়োগের কৌশল’-এর বিরুদ্ধে সতর্ক করেন, যা ইরানের সার্বভৌম অধিকার ক্ষুন্ন করছে।

পশ্চিমা আধিপত্যের বিরুদ্ধে কৌশলগত ঐক্য

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এই বৈঠক ছিল ‘একতরফাবাদ ও আধিপত্যবাদী চর্চার বিরুদ্ধে কূটনৈতিক প্রতিরোধের অংশ’।

বিবৃতিতে বলা হয়, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা শুধু ইরানেই নয়, গ্লোবাল সাউথ বা দক্ষিণ গোলার্ধের উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও মানবিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তেহরানের মতে, মস্কো ও বেইজিংয়ের সঙ্গে এই ত্রিপাক্ষিক সংলাপ একটি বহুমুখী আঞ্চলিক কাঠামো গঠনের জন্য কৌশলগত ভিত্তি তৈরি করছে। 

বৈঠকে তিন দেশই আগামী সপ্তাহ ও মাসগুলোতে পরস্পরের মধ্যে আরও নিবিড় পরামর্শ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

ইউরোপীয় ‘ট্রোইকা’র সঙ্গে আসন্ন বৈঠক

এ বৈঠকের পর খুব শিগগিরই ইস্তাম্বুলে ইরান ও ইউরোপীয় ‘ট্রোইকা’ (ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য)-র মধ্যে আরেক দফা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।

গারিবাবাদি নিশ্চিত করে বলেন, সেই বৈঠকে স্ন্যাপব্যাক ব্যবস্থা নিয়ে বিরোধ ও পরমাণু চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার অগ্রাধিকার থাকবে।

ইরানের পক্ষ থেকে তখন অঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাস্তবসম্মত প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তেহরান স্পষ্ট করে বলেছে—স্থায়ী সমাধানের পূর্বশর্ত হিসেবে সব নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণ ও নিঃশর্তভাবে প্রত্যাহার করতে হবে।

মূলত, চীন-রাশিয়া ও ইরানের এই ত্রিপাক্ষিক সংলাপ স্পষ্ট করে দিচ্ছে, বৈশ্বিক ভূরাজনীতিতে এই তিন দেশ একটি যৌথ কৌশলগত বলয় গঠনের মাধ্যমে পশ্চিমা একাধিপত্যবাদ ও একতরফা চাপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। সূত্র: ইরনা ও আল-মায়াদিন


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন