কুবিতে শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন


কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর মুতাসিম বিল্লাহকে 'রক্তাক্ত জুলাই - ২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মো: কামরুল হাসান কর্তৃক প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১২ তারিখ) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন হয়।
এসময় 'বিচার চাই, বিচার চাই–হাসান কামরুলের বিচার চাই', 'নিষিদ্ধ চাই, নিষিদ্ধ চাই–হাসান কামরুলের নিষিদ্ধ চাই' স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা মো: কামরুল হাসানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার ও প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন ইরা বলেন, 'আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন আসি তখন আমাদের সাবেকরা আমাদের আস্থার জায়গা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কিছু সাবেক সিনিয়র ভাইয়েরা এমন কিছু কাজ করে যাতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়। আমরা দেখেছি তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য এমন কোনো কাজ বাকি রাখেননি যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান নিচে নামাতে সাহায্য করে। যখন এমন মানুষ শিক্ষকদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়, তখন এটা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্যও আরও বড় একটা হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। আমরা চাই এই হাসান কামরুলকে ক্যাম্পাস থেকে চির-বহিষ্কার করা হোক এবং তাকে তার এই কাজের জন্য প্রকাশ্যে সবার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।'
লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসান অন্তর বলেন, 'হাসান কামরুল একজন সাইকোপ্যাথ স্বভাবের ব্যক্তি। তার কাজ হলো, যারা ক্যাম্পাসে ভালো কাজ করছে তাদের পেছনে লেগে থাকা এবং বিভিন্নভাবে বাধা সৃষ্টি করা। যদিও সে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী, তবুও সে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিষয়ে অপ্রয়োজনে নাক গলায় এবং যারা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধাচরণ করে। মুতাসিম বিল্লাহ স্যার একজন পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি। তিনি মাদকবিরোধী কার্যক্রম ও জুলাই কমিটির সক্রিয় দায়িত্ব পালন করেছেন। যারা ভালো কিছু করতে চায়, তাদের ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে, তাদেরকে নিজের মতো করে চলতে বাধ্য করার চেষ্টা করে এবং কখনো কখনো হুমকিও দিয়ে থাকে হাসান কামরুল। আমরা চাই, তাকে এই ক্যাম্পাস থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হোক।'
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরাফ ভূঁইয়া বলেন, '২০২০ সালে আমরা ১৪ ব্যাচ যখন থেকে ক্যাম্পাসে এসেছি, তখন থেকে দেখে যাচ্ছি এই ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসান কামরুলের অপকর্মের তালিকা কম নয়। সে নানা সময় নানা নিয়োগে আবেদন করেছে। কিন্তু যখনই তার আবেদন বাতিল হয়েছে কিংবা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়নি, তখনই সে তার শত্রু হয়ে গিয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাই এই হাসান কামরুলের মতো যারা ক্যাম্পাসে আছে, তাদের অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং এই ক্যাম্পাস থেকে তাদেরকে নিষিদ্ধ করতে হবে।'
উল্লেখ্য, গত ১১ জুলাই (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি অবহিতকরণ ও বিচারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দেন শিক্ষক মুতাসিম বিল্লাহ। সে ভিত্তিতে অভিযুক্ত হাসান কামরুলের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া, গতকাল (১২ জুলাই) কুমিল্লা সদস্য দক্ষিণ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।
