টানা বৃষ্টিতে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা, যানজটে স্থবির জনজীবন


রাজধানীজুড়ে সকাল থেকে টানা বৃষ্টির কারণে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বুধবার (৯ জুলাই) গুঁড়ি গুঁড়ি থেকে শুরু করে কখনো ভারী বর্ষণে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে তীব্র জলাবদ্ধতা, যানজট এবং রাস্তায় চলাচলে অচলাবস্থা।
বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ, দিনমজুর ও শিক্ষার্থীরা। অনেকেই কর্মস্থলে যেতে না পেরে বাসায় অবস্থান করছেন। রিকশা ও ভ্যানচালকদের আয়ও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
ধানমন্ডি, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, মালিবাগসহ অনেক এলাকায় রাস্তায় হাঁটু পানি জমে চলাচল হয়ে পড়েছে কঠিন। এসব এলাকার বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন, বৃষ্টি এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন রিকশাচালকরা। মালিবাগ এলাকায় দোকানের ছাউনির নিচে রিকশা ফেলে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েকজন। তাদের একজন বলেন, "লোকজন বের হয় না, তাই ভাড়া পাই না। রিকশার চাকা না ঘুরলে খাওয়া জোটে না। কয়েকদিন ধরে যা বৃষ্টি হচ্ছে, মনে হয় না খেয়ে থাকতে হবে।"
মোহাম্মদপুরের এক বাসিন্দা বলেন, "প্রতিবারই বৃষ্টি হলে রাস্তাঘাট ডুবে যায়। এবারও একই অবস্থা। একদিনের বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা। বাসা থেকে বের হতে পারি না। সিটি করপোরেশন শুধু আশ্বাস দেয়, কাজ করে না।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, "সকাল থেকে যানবাহন পেতে অনেক কষ্ট হয়েছে। রাস্তায় যানজট, ক্লাসে সময়মতো পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।"
বৃষ্টির ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেল চালকদেরও। এক যাত্রী জানান, মোহাম্মদপুর থেকে মতিঝিল যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাইড বুক করলেও যানজটে আটকে শাহবাগেই নামতে হয়েছে। চালক বলেন, “গতকাল থেকে ভিজে ভিজে কাজ করছি। আজ সকাল থেকেও কোনো ভাড়া পাইনি, এখন শরীর খারাপ লাগছে।”
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সক্রিয় মৌসুমি বায়ু এবং লঘুচাপের প্রভাবে আগামী কয়েকদিন সারা দেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু স্থানে মাঝারি থেকে ভারী কিংবা অতি ভারী বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
