কিশোরগঞ্জে এনসিপির পথসভা


এই তারুণ্যের শক্তিকে যদি দেশ গঠনের কাজে লাগানো না যায়, তবে বাংলাদেশ আর কখনোই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না”—এ মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার (২৬ জুলাই) রাতে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরান থানায় এনসিপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সভার আয়োজন করে এনসিপি কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল তরুণদের নেতৃত্বে। তখন মানুষ বিশ্বাস করেছিল পরিবর্তন আসবে। আজও আমাদের সেই তারুণ্যের শক্তির ওপর আস্থা রেখে এগিয়ে যেতে হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টিকে শক্তিশালী করতে হবে, কারণ তারাই দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে এবং জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সক্ষম।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের ৫৪ বছরের দুর্নীতিপরায়ণ মাফিয়াতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার। জনগণের শক্তিই সেই পরিবর্তনের প্রধান হাতিয়ার। কিশোরগঞ্জ থেকেই এর সূচনা হতে পারে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “কিশোরগঞ্জ একটি হাওর অধ্যুষিত জেলা। এখানকার মানুষ প্রতি বছর বর্ষায় পানিবন্দী হয়ে পড়ে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান—সবকিছুতেই রয়েছে চরম ঘাটতি। স্কুল আছে, কিন্তু শিক্ষক নেই। হাসপাতাল আছে, কিন্তু চিকিৎসক নেই। বাজেট হয়, কিন্তু বাস্তবায়ন নেই। রাষ্ট্রপতি আছেন, কিন্তু মানুষের উন্নয়ন নেই।”
তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি কিশোরগঞ্জ চাই, যেখানে প্রত্যেকটি শিশু বিদ্যালয়ে যেতে পারবে, যুবসমাজ কর্মসংস্থান পাবে, মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাবে এবং যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই জেলায় সুপেয় পানির সংকট প্রকট। কৃষকেরা সারের সনদ পায় না, সেচ সুবিধা পায় না, বাজারে তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্যও পায় না। এটা স্বাধীন দেশে কাম্য নয়। কৃষকেরা যদি তাদের উৎপাদনের সঠিক মূল্য না পায়, তবে দেশের খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই কিশোরগঞ্জ রাষ্ট্রপতি পেয়েছে, কিন্তু এখানকার মানুষ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ—কোনো উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে না। রাষ্ট্রের অব্যবস্থা ও অবহেলা এখানকার মানুষের প্রাপ্য অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা এনসিপির নেতৃবৃন্দের বক্তব্য
সভায় কিশোরগঞ্জ জেলা এনসিপির নেতৃবৃন্দও বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, “কিশোরগঞ্জের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। এনসিপি হাওরবাসীসহ সব জনগণের কথা বলে। এই এলাকায় টেকসই অবকাঠামো, মানসম্পন্ন শিক্ষা, কৃষির উন্নয়ন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন অপরিহার্য।”
নেতারা আরও বলেন, “দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এই জনগণের আন্দোলনে শামিল হতে হবে। এনসিপি-ই পারে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে প্রতিটি মানুষ নাগরিক অধিকার পাবে, মর্যাদা পাবে। আমাদের বিশ্বাস, কিশোরগঞ্জ একদিন জাতীয় নাগরিক পার্টির শক্তিশালী ঘাঁটিতে পরিণত হবে। এখান থেকেই শুরু হবে রাষ্ট্র সংস্কারের নতুন ইতিহাস।”
দৈএনকে/ জে. আ
