জকশিন-দরবেশপুর খালের দুর্দশা নিরসনে নেই কার্যকর উদ্যোগ


লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার জকশিন থেকে রামগঞ্জ উপজেলার দরবেশপুর পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি আজ রীতিমতো মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। গত বছরের ভয়াবহ বন্যার পর থেকে সংস্কারের অভাবে খালজুড়ে জমেছে কচুরিপানার স্তূপ, উপড়ে পড়েছে বনবিভাগের শত শত গাছ। খালের দুই পাশ জুড়ে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা, অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হয়েছে ব্রীজ ও কালভার্ট—যার ফলে পানি চলাচলে সৃষ্টি হয়েছে চরম প্রতিবন্ধকতা।
ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই রামগঞ্জ ও সদর উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন। অনেক জায়গায় দেখা গেছে, খালের পানিপথ একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে, আর সেখানে জমে থাকা পানিতে জন্ম নিয়েছে নানা রোগজীবাণু ও দুর্গন্ধ।
জানা গেছে, বিগত বন্যা এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয়রা একাধিকবার প্রশাসন এবং বনবিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ হলেও বনবিভাগ পক্ষ থেকে নেই কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি।
ছাগলছেঁড়া এলাকায় খালের উপশাখায় সামান্য কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও, মূল খালজুড়ে গাছপালা ও অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা এখনো বহাল তবিয়তে আছে। এর ফলে এই অঞ্চলের জলাবদ্ধতা আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে।
সম্প্রতি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের কিছু কার্যক্রম শুরু হলেও পুরো খালজুড়ে তা বিস্তৃত হয়নি। ফলে দীর্ঘমেয়াদে এই জলাবদ্ধতা নিরসনের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাবেই হাহাকার চলছে লক্ষ্মীপুরের হাজারো পরিবারে।
স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসন যেন অবিলম্বে কার্যকর উদ্যোগ নেয়। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, উপড়ে পড়া গাছ অপসারণ, কচুরিপানা পরিষ্কার এবং সঠিক পরিকল্পনায় ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণের মাধ্যমে খালটির স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনা হোক। তা না হলে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে লক্ষ্মীপুরবাসীকে এই দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হবে।
