লক্ষ্মীপুরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত জসিম উদ্দিন ব্যাপারীর মৃত্যুর ঘটনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রায়পুর খাসেরহাট বাজারে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত মানববন্ধনে কয়েকশ মানুষ অংশ নেন। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের ফাঁসির দাবি জানান।
এর আগে সংঘর্ষের ঘটনায় স্পেনপ্রবাসী বিএনপি কর্মী সাইজ উদ্দিন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত হন আরও অন্তত ১৫ জন। আহতদের মধ্যে জসিম উদ্দিন ব্যাপারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ফারুক কবিরাজকে প্রধান আসামি করে তার ভাই মেহেদী কবিরাজসহ মোট ২৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ১৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানা গেছে।
অন্যদিকে, সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের অন্তত তিনটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং ১৫টির বেশি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। যদিও এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আলাদা কোনো মামলা হয়নি। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, ঘটনার মূল হোতাদের আড়াল করে একটি প্রভাবশালী মহল বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।
এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রায়পুর উপজেলা বিএনপি থেকে ১৫ নেতাকর্মীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। কৃষকদলের সদস্য সচিব জিএম শামীমকেও বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।
৯ এপ্রিল উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সালেহ আহম্মদ এবং সদস্য সচিব সফিকুর রহমান ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে রয়েছেন, মেহেদী কবিরাজ (৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি), এবাদ উল্যা গাজী (৭ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি), ফারুক কবিরাজ (ইউনিয়ন বিএনপি), সফিক রাড়ী (৮ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক), আরিফ (স্বেচ্ছাসেবক দল, ৮ নম্বর ওয়ার্ড), ফারুক গাজী, রায়হান (স্বেচ্ছাসেবক দল, ৭ নম্বর ওয়ার্ড), আল-আমিন কবিরাজ (স্বেচ্ছাসেবক দল, ৬ নম্বর ওয়ার্ড), মানিক আহমেদ তারেক (স্বেচ্ছাসেবক দল আহ্বায়ক), ওমর আলী হাওলাদার (সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক), নজরুল ইসলাম (স্বেচ্ছাসেবক দল, ৬ নম্বর ওয়ার্ড), শরিফ বাগ, শাহজাহান মাঝি (যুবদল) এবং শাহ আলী (কৃষকদল সদস্য সচিব)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বহিষ্কৃতদের সঙ্গে কোনো ধরনের দলীয় যোগাযোগ না রাখতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল বিকেলে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির ফারুক কবিরাজ ও কৃষকদল নেতা জিএম শামীম গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুইজন নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হন।
