গাজায় দুই বছরের লড়াই: হামাস এখন কতটা শক্তিশালী?

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের এক অনুষ্ঠানে হামলা চালায় হামাস। এরপর ইসরায়েল গাজায় আক্রমণ শুরু করে। এখনও সেই লড়াই চলমান।
গত দুবছরে গাজা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। উত্তর, দক্ষিণ এবং গাজা শহরে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাসের প্রথম সারির অধিকাংশ নেতা নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েল দাবি করেছে।
উল্লেখ্য, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ একাধিক দেশ এবং মঞ্চ হামাসকে ভালো চোখে দেখে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত দু’বছরে হামাসের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। সংগঠন ভেঙে গেছে। নেতৃত্ব ভেঙে পড়েছে। কিন্তু হামাস সম্পূর্ণ ক্ষমতা হারিয়েছে, এমন মনে করার কারণ নেই। যে কোনো সময় হামাস নতুন করে সংঘবদ্ধ হতে পারে। নতুন নেতৃত্ব তৈরি হতে পারে এবং নতুন করে তারা শক্তি সঞ্চয় করতে পারে। তবে ইসরায়েলের হাতে যে অস্ত্র আছে, হামাসের হাতে সেই পরিমাণ অস্ত্র নেই বলেও জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজের ওয়ার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মারিনা মিরন বলেছেন, হামাস প্রচুর ঘাতপ্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে গেছে। কিন্তু নতুন করে সংঘবদ্ধ হওয়ার ক্ষমতা এখনো তাদের আছে। গাজায় তাদের প্রভাবও যথেষ্ট। দু’বছর আগে হামাস যখন ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়েছিল এবং প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, তখন তাদের যোদ্ধার সংখ্যা ছিল ২৫ থেকে ৩০ হাজার।
গত দু’বছরে ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাসের অন্তত ১৭ থেকে ২৩ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল এই দাবির সপক্ষে কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ দেয়নি।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, ইসরায়েলের দেওয়া সংখ্যা ঠিক তথ্য নয়। বহু হামাস যোদ্ধা এখনো নিরাপদ আশ্রয় থেকে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলের সামরিক তথ্য খতিয়ে দেখে কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, সব মিলিয়ে আট হাজার ৫০০ হামাস যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। ইসরায়েলের একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, ইসরায়েলের সেনা বাহিনীর কাছে ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত নথিভুক্ত নিহত হামাস যোদ্ধার নামের সংখ্যা আট হাজার ৯০০।
এখনো পর্যন্ত গাজায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৬৬ হাজার মানুষের। অর্থাৎ, দেখা যাচ্ছে মোট নিহতের ৮০ শতাংশ মানুষ বেসামরিক নাগরিক। যার মধ্যে নারী এবং শিশুও আছে।
সংবাদসংস্থা রয়টার্সের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত দু’বছরে হামাস অন্তত ১০ থেকে ১৫ হাজার নতুন যোদ্ধা নিয়োগ করেছে। ফলে হামাস সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে এবং অকেজো হয়ে গেছে, এমনটা মনে করার কারণ নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রে, আ