ঘুষের ভিডিও ভাইরাল, পরশুরাম থানার এসআই প্রত্যাহার


ফেনীর পরশুরাম মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু ছৈয়দের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলার এক আসামির কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের সঙ্গে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ বিভাগ তাকে তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, এসআই আবু ছৈয়দকে পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি পুলিশ কর্মকর্তাকে মোটা অঙ্কের টাকা দিচ্ছেন। ঘটনাটি ঘটে একটি নারী নির্যাতন মামলার তদন্ত চলাকালে। অভিযোগ রয়েছে, আসামিপক্ষ মামলা 'ম্যানেজ' করতে এসআইকে ঘুষ দিয়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
তবে এসআই আবু ছৈয়দ ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য, “ভিডিওটি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি কোনো ঘুষ নেইনি। বরং নিজের পকেটের টাকাই দেখিয়েছিলাম।”
পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভিডিও এবং ঘটনার তদন্ত শেষে উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া গেলে এসআই আবু ছৈয়দের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, পুলিশের ঘুষ লেনদেনের এমন ভিডিও এর আগেও নানা সময় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে প্রতিটি ঘটনার পর দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে অনেক সময় তার বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন থাকে।
ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় নারী নির্যাতন মামলার এক আসামির কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু ছৈয়দ। ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বুধবার (২ জুলাই) তাকে তাৎক্ষণিকভাবে থানার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে ফেনী পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
৩৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের আব্দুস ছাত্তার (৫৫) নামের এক ব্যক্তি এসআই আবু ছৈয়দকে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ঘটনার সময় তাঁরা ছাত্তারের বাসার সিঁড়ির নিচে অবস্থান করছিলেন। ভিডিওটি সিসিটিভিতে ধারণ করা হয় এবং ভাইরাল হয় ঘটনার ১০ দিন পর।
ঘটনার পেছনের প্রেক্ষাপট
গত ২২ জুন অনন্তপুর গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিনের স্ত্রী পান্না আক্তার অভিযোগ করেন, তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন একই গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে আব্দুস ছাত্তার। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই আবু ছৈয়দ।
ঘটনার দিন তদন্ত কর্মকর্তা ছাত্তারের বাড়িতে যান। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় তদন্ত ‘ম্যানেজ’ করার জন্য ছাত্তার তার হাতে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ভিডিওতে সেই মুহূর্তের একটি দৃশ্য স্পষ্ট দেখা যায়।
যা বলছেন অভিযুক্ত ও আসামি
অভিযুক্ত এসআই আবু ছৈয়দ দাবি করেছেন, “আমি কোনো টাকা নেইনি। আসামি যখন আমাকে টাকা দিতে চেয়েছে, তখন আমি আমার পকেট থেকে নিজ টাকাটা বের করে বলেছি— টাকা লাগবে না, আমার কাছে টাকা আছে।” তিনি ভিডিওর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এদিকে মামলার আসামি আব্দুস ছাত্তার বলেন, “আমি টাকা বের করেছিলাম, তবে সেটা ঘুষ দেওয়ার উদ্দেশ্যে নয়। অনেক কথার ফাঁকে এমনটা হয়েছে।”
পুলিশের অবস্থান
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল হাকিম বলেন, “ভিডিওটি নজরে আসার পরপরই এসআই আবু ছৈয়দকে থানার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ফেনী পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সতর্কবার্তা: পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষের মতো গুরুতর অভিযোগ নিয়ে যথাযথ ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে সত্য উদঘাটনের পাশাপাশি প্রশাসনের প্রতি জনসাধারণের আস্থা অটুট থাকে।
