বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করলেন নেতানিয়াহু

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করলেন নেতানিয়াহু
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজা সঙ্ঘাত বন্ধ হওয়ার পর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রস্তাব তার বিরোধিতা করেন তিনি।

এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ‘পুরোপুরি বিজয়’ অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত গাজায় আক্রমণ অব্যাহত থাকবে।

‘পুরোপুরি বিজয়’ বলতে নেতানিয়াহু হামাসের ধ্বংস এবং বাদবাকি ইসরাইলি পণবন্দীদের মুক্তির কথা বোঝাচ্ছেন। তিনি এটাও বলছেন, এই লক্ষ্য অর্জনে আরো অনেক মাস লাগতে পারে।

হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ২৫ হাজার ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৮৫ শতাংশ গাজাবাসী।

এর জেরে হামলা বন্ধ এবং স্থায়ীভাবে যুদ্ধের ইতি টানার লক্ষ্যে অর্থবহ সংলাপে অংশ নিতে ব্যাপক চাপ আসে ইসরাইলের ওপর।

ইসরাইলের বিরোধীরা তো বটেই এমনকি মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও নতুন করে দীর্ঘদিন আলোচনার বাইরে থাকা সেই দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানেরই তাগিদ দিচ্ছে।

দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান মানে ভবিষ্যতের ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইসরাইলের পাশেই প্রতিষ্ঠা পাবে।

কারো কারো প্রত্যাশা, বর্তমান সঙ্কট হয়তো বিবদমান পক্ষগুলোকে আবার কূটনীতির পথে ফিরতে বাধ্য করবে। সেটিই অন্তহীন সঙ্ঘাত বন্ধের একমাত্র পথ। কিন্তু, নেতানিয়াহুর মন্তব্য বলে দেয়, তাদের বিপরীত মনোভাব।

বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘জর্ডান নদীর পশ্চিমের ভূখণ্ডে ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণ থাকা আবশ্যক।’ অথচ, এই ভূমি সম্ভাব্য ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সীমানার মধ্যে পড়ার কথা।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটা এক অপরিহার্য পরিস্থিতি এবং এটা ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বের সাথে সাংঘর্ষিক। কিন্তু, কী আর করা? আমি আমার মার্কিন বন্ধুদের এই সত্যিটাই বলেছি এবং ইসরাইলের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে এমন কোনো বাস্তবতা আরোপ করার চেষ্টা বন্ধ করে দিয়েছি।’

নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের একটা বড় অংশ ব্যয় করেছেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ধারণার বিরোধিতায়। গত মাসেই সদর্পে বলেছেন, সেই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ঠেকিয়ে দিতে পেরে তিনি গর্বিত।

ফলে, তার সর্বশেষ বক্তব্যে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক তৎপরতার প্রকাশ্য বিরোধিতা এবং চলমান সামরিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার প্রত্যয় বলে দেয় পাশ্চাত্যের মিত্রদের সাথে ইসরাইলের দূরত্ব বাড়ছে।

৭ অক্টোবর ইসরাইলের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা ঘটে। হামাস সদস্যরা এক হাজার ৩০০ জনকে হত্যা করেন। পণবন্দী করা হয় প্রায় ২৫০ জনকে।

সেই শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে মর্মে সমর্থন জানিয়ে আসছে।

কিন্তু, গাজায় নিহতের সংখ্যা আর ভয়াবহতা যখন দিনকে দিন বাড়তে থাকল, পাশ্চাত্যের দেশগুলোর সরকার তখন ইসরাইলকে রাশ টানার আহ্বান জানায়।

হোয়াইট হাউজ বারবার ইসরাইলি সামরিক নীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে আসছে।

নির্বিচার বিমান হামলা না চালিয়ে, সুনির্দিষ্ট ও সুনিয়ন্ত্রিত অস্ত্রের ব্যবহারের তাগিদ দিচ্ছে তারা। নিরুৎসাহিত করে আসছে স্থল হামলাকে। যুদ্ধোত্তর গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সম্পৃক্ত করে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের আহ্বানও তাদের।

কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্রের উপদেশ কানে তোলা তো হয়ইনি বরং কখনো কখনো প্রকাশ্যে খারিজ করে দেয়া হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সাম্প্রতিক সফরের সময়েই এমন ঘটনা ঘটেছিল।

নিঃশর্ত সহায়তা না দেয়ার জোর দাবি সত্ত্বেও ইসরাইলের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের অকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে তাই হতাশাও বাড়ছে মার্কিন বলয়ে।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সর্বশেষ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান বলেন, ‘তার সরকার দ্বী-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। যুদ্ধের পরে গাজা পুনর্দখল করা যাবে না।’

তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য তার সমর্থক এবং মন্ত্রিসভার কট্টর সদস্য যাদের সহায়তায় তার সরকার টিকে আছে তাদের খুশি করবে।

কিন্তু যারা দেশে-বিদেশে এই যুদ্ধের মানবিক ক্ষতি নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত তাদেরকে হতাশ করবে।

সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, বেশিরভাগ ইসরাইলি চান হামাসকে ধ্বংস করার প্রায় অসম্ভব লক্ষ্যের পেছনে ছোটার চেয়ে পণবন্দীদের ফিরিয়ে আনাটা নেতানিয়াহু সরকারের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।


বিবিসি
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন  

A PHP Error was encountered

Severity: Core Warning

Message: PHP Startup: Unable to load dynamic library 'tidy.so' (tried: /opt/cpanel/ea-php74/root/usr/lib64/php/modules/tidy.so (libtidy.so.5: cannot open shared object file: No such file or directory), /opt/cpanel/ea-php74/root/usr/lib64/php/modules/tidy.so.so (/opt/cpanel/ea-php74/root/usr/lib64/php/modules/tidy.so.so: cannot open shared object file: No such file or directory))

Filename: Unknown

Line Number: 0

Backtrace: