অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে এমডি


দেশের একমাত্র মদ উৎপাদনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান চুয়াডাঙ্গার কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বিডি) লিমিটেড দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দখলদারিত্বে জর্জরিত ছিল। কিন্তু গত বছরের আগস্টে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে রাব্বিক হাসান দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির চিত্র দৃশ্যতই বদলে যেতে শুরু করেছে।
বিগত প্রায় ১৭ বছরে কেরু অ্যান্ড কোম্পানিকে লুটপাটের আখড়ায় পরিণত করেছিল কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তা ও স্থানীয় রাজনৈতিক সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের দুর্নীতির কবল থেকে বেরিয়ে এসে কেরু অ্যান্ড কোম্পানিকে লাভজনক খাতে নিয়ে যেতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বর্তমান এমডি রাব্বিক হাসান।
তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন খাতে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন করেছে। ডিস্টিলারি ইউনিটে উৎপাদন ও রিকভারি বেড়েছে, শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে, এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আগের তুলনায় অনেক বেশি জোরদার করা হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই, দীর্ঘদিনের সুবিধাবাদী একটি মহল রাব্বিক হাসানের এই দৃঢ় অবস্থান সহ্য করতে পারছে না। অতিরিক্ত সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে তারা তার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তৈরি করে গণমাধ্যমে প্রচার চালানোর চেষ্টা করছে। তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই না করে কিছু সংবাদ প্রকাশিত হলেও তদন্তে এসবের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
একটি সংবাদে দাবি করা হয়, এমডি অফিস থেকে বের হন না। কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে, তিনি নিয়মিতভাবে কারখানার বিভিন্ন বিভাগ, আখচাষি ও ফার্ম পরিদর্শন করছেন এবং উন্নয়ন কার্যক্রম তদারকি করছেন। চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাব্বিক হাসান আখ চাষিদের আধুনিক প্রযুক্তি ও সঠিক পদ্ধতির বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
রাব্বিক হাসানের নেতৃত্বে কেরু অ্যান্ড কোম্পানিতে যেসব গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ ও অনিয়ম বন্ধে পদক্ষেপ, নতুন অটোমেশন মেশিনারিজ ক্রয় প্রক্রিয়া প্রবর্তন, কান্ট্রি লিকার বোটলিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন ও ট্রেজারি চালান দাখিল, রাসায়নিক কারখানা, জৈব সার উৎপাদন ও ভিনেগার ইউনিটের উন্নয়ন, নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন: সিসিটিভি ক্যামেরা, কাঁটাতার, রেলগেট সিস্টেম, অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন: বিভিন্ন ইউনিটে রিকোভারি ও উৎপাদন বৃদ্ধি, এবং মুনাফার পরিমাণ বাড়ানো।
বর্তমানে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির নতুন উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে আধুনিক ল্যাব টেস্টিং, পৃথক বন্ডেড পণ্যগার, আন্ডার প্রুফ লিকার উৎপাদনের নতুন লেভেলিং পদ্ধতি, এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (DNC) নিয়ম অনুযায়ী প্রক্রিয়া অনুসরণ।
এছাড়া মিষ্টি কুমড়া চাষের জন্য জমি ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়েছে, এবং এতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কোনও ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই বলেও নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির বর্তমান এমডি রাব্বিক হাসানের দক্ষ নেতৃত্ব, দূরদর্শী পরিকল্পনা ও কঠোর মনিটরিংয়ের ফলে প্রতিষ্ঠানটি আজ নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। তার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ ছড়িয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা সফল হবে না বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
কেরু অ্যান্ড কোম্পানি এখন সঠিক পথে আছে, এবং আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সর্বোচ্চ মুনাফার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে—এমন প্রত্যাশা রাখছে কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সরকারি মহলও।
