এবার ভোট দিতে পারবেন ১০ লাখ সরকারি কর্মচারী: নির্বাচন কমিশন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনরত সরকারি কর্মকর্তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি বলেন, “নির্বাচনের দিন প্রায় ১০ লাখ সরকারি চাকরিজীবী ভোটগ্রহণের কাজে নিয়োজিত থাকবেন। আমরা চাই, তারাও যেন নাগরিক হিসেবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।”
সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সিইসি বলেন, “এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রযুক্তিগত ও প্রশাসনিক দিক থেকে কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে।”
তিনি আরও বলেন, “ভোটগ্রহণে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত না করাই আমাদের লক্ষ্য।”
সিইসি নাসির উদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, “সবার সহযোগিতায় একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।”
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সংলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশন ইসির কাজ হালকা করে দিয়েছে। তারা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তাই আমাদের সংলাপ একটু দেরিতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনের জন্য বারবার বলছি। আজকের সংলাপ শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা নয়। আপনাদের (গণমাধ্যমের) মতামত নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিতে আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। মিসইউনফরমেশন, ডিসইনফেমেশন অ্যাড্রেস করার জন্য আপনাদের গুরুত্ব অনেক।
সিইসি বলেন, আমরা আয়নার মতো স্বচ্ছ একটা নির্বাচন করতে চাই। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সহযোগিতা ছাড়া লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও নির্বাচনের অনূকূল পরিবেশ তৈরি সম্ভব নয়।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করার লক্ষ্য ইসি অনেক কাজ এগিয়ে নিয়েছে জানিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, বিশেষ করে ভোটার তালিকা হালনাগাদের বড় কাজ এগিয়ে নিয়েছে। ভোটের প্রতি মানুষের অনাগ্রহ তৈরি হয়েছিল, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের ও নারীদের। সেটি পুনরুদ্ধার করেছে বর্তমান কমিশন।
তিনি বলেন, ২১ লাখের বেশি মৃত ভোটার চিহ্নিত করে ফেলেছি, যাদের অনেকে ভোট দিয়ে যেতো, মিডিয়ায় এমন নিউজ দেখেছি। ৪৩ লাখের বেশি ভোটাযোগ্যদের তালিকাভুক্ত করতে পেরেছি। নারী পুরুষের ব্যবধান ৩০ লাখ ছিল। এখন ১৮ লাখে নেমে এসেছে। মানুষ বিশেষ করে নারী যে ভোটার হতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল আমরা আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছি।
সিইসি বলেন, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করছি। ভোটের দায়িত্বে যারা থাকেন প্রায় ১০ লাখ লোক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি চাকরিজীবী ও হাজতিদের ভোটের আওতায় আনব।
তিনি বলেন, আমরা এবার এটা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি, আইনে আগেও ছিল। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন করতে পারব না, এটা সাফ কথা।
ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজের সঞ্চালনায় এ সময় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ভোটের সংলাপ শুরু করে ইসি। ওইদিন সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। আজ গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সংলাপ করছে ইসি। ৭ অক্টোবর নারী নেত্রী ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার কথা রয়েছে। এরপর জুলাই যোদ্ধা, রাজনৈতিকদলগুলোর সঙ্গেও বসবে ইসি।