অ্যানথ্রাক্স: ভয় নয়, প্রয়োজন সচেতনতা

অ্যানথ্রাক্স (Anthrax) হলো একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ, যা ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস (Bacillus anthracis) নামক ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ছড়ায়। রোগটি দ্রুত বিস্তার লাভ করতে পারে এবং সময়মতো চিকিৎসা না নিলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। সাধারণত এই রোগ ছাগল, গবাদি পশু, ভেড়া এবং ঘোড়াসহ বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে দেখা যায়, তবে মানুষও সংক্রমিত হতে পারে। সম্প্রতি বাংলাদেশের কিছু জেলায় অ্যানথ্রাক্স ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
লক্ষণ
মানুষের অ্যানথ্রাক্স মূলত তিন প্রকারের হয়, তাই লক্ষণও প্রকারভেদে ভিন্ন:
১. ত্বকের অ্যানথ্রাক্স (Cutaneous Anthrax)
- চুলকানিযুক্ত ছোট ফোসকা দেখা দেয়
- পরে ব্যথাহীন কালো ঘা হিসেবে রূপ নেয়
- হাতে, মুখে বা কাঁধে কালো দাগ দেখা যায়
২. ফুসফুসের অ্যানথ্রাক্স (Inhalational Anthrax)
- জ্বর, ঘাম, বমি বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট
- অস্থিরতা, বুকে ব্যথা, কাশি
৩. অন্ত্রের অ্যানথ্রাক্স (Gastrointestinal Anthrax)
- বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা
- হালকা জ্বর, মাংসপেশিতে ব্যথা, গলাব্যথা
কারণ
অ্যানথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরে তিনভাবে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটায়:
- ত্বকের মাধ্যমে: পশুজাত পণ্য থেকে ত্বকের কাটা বা আঁচড়ে প্রবেশ করে
- শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে: ব্যাকটেরিয়ার রেণু শ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে ফুসফুসে যায়
- খাবারের মাধ্যমে: অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুর মাংস খেলে সংক্রমণ হয়
চিকিৎসা
- অ্যান্থ্রাক্সের চিকিৎসা অ্যান্টিবায়োটিক ও টিকা দ্বারা করা হয়।
প্রতিরোধ
- গৃহপালিত পশুকে নিয়মিত টিকা দিন
- রোগাক্রান্ত পশুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
- মাংস কাটার, ধোয়ার ও রান্নার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন
- হাতে বা শরীরে কাটা থাকলে মাংস কাটার ও রান্না থেকে বিরত থাকুন
- রান্নার সময় দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করুন
অ্যানথ্রাক্স ভয়ঙ্কর হলেও, সচেতনতা ও সতর্কতা অবলম্বন করলে এটি সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
দৈএনকে/জে .আ