নোবিপ্রবির শিক্ষক নিয়োগ বিতর্কের গভীরে যা জানা গেল


নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আইন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা, পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তপূরণ নিয়ে বিভিন্নমহলে প্রশ্ন উঠেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, নীতিমালা অনুযায়ীই নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় ড. মো. ছফিউল্লাহকে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ড. ছফিউল্লাহ ২০০১ সালে এইচএসসি পাস করেন। ২০০৭ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে এলএলবি (৫৬.৬০%) এবং ২০০৯ সালে এলএলএম (সিজিপিএ ৩.৫৮) ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০২৫ সালের ৯ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
শিক্ষকতা অভিজ্ঞতার দিক থেকে তিনি ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার হিসেবে ৪ বছর ৩ মাস, সিনিয়র লেকচারার হিসেবে ৫ বছর ১ মাস এবং সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ৫ বছর ৪ মাস কর্মরত ছিলেন। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু ‘সিনিয়র লেকচারার’ পদে পাওয়া অভিজ্ঞতাকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ধরা হয়েছে কিনা।
এ বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে, ইউজিসি নীতিমালায় সিনিয়র লেকচারার পদটি স্বীকৃত নয় এবং সেটিকে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে গণ্য করা সঠিক নয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, ড্যাফোডিল টাইমস হায়ার এডুকেশনের র্যাংকিংয়ে শীর্ষ এক হাজারের মধ্যে রয়েছে, এবং সেই প্রতিষ্ঠানে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় কাজ করায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বৈধ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ড. মো. একরামুল হক বলেন, ‘সিনিয়র লেকচারার পদটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে না থাকলেও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পদের শিক্ষকরা সহকারী অধ্যাপকের সমতুল্য কাজ করে থাকেন। ফলে এমন অভিজ্ঞতা গ্রহণযোগ্য হতে পারে।’
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বাবু বলেন, ‘টাইমস র্যাংকিংয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষকতা করলে সেই অভিজ্ঞতা ইউজিসি নীতিমালায় গ্রহণযোগ্য বলেই বিবেচিত।’
নোবিপ্রবির রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য বলেন, ‘ইউজিসির ২০২১ সালের নীতিমালার ৫ ধারা অনুযায়ী পিএইচডিধারী প্রার্থীদের সহকারী অধ্যাপক পদে ন্যূনতম চার বছরসহ মোট সাত বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। ড. ছফিউল্লাহর সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পাঁচ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা থাকায় নিয়োগ নিয়ম অনুযায়ীই হয়েছে।'
