শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

বাংলাদেশিদের জন্য ইন্দোনেশিয়ায় ভিসামুক্ত ভ্রমণের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার

বাংলাদেশিদের জন্য ইন্দোনেশিয়ায় ভিসামুক্ত ভ্রমণের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইন্দোনেশিয়া। সোমবার (২ জুন) ঢাকায় এক বৈঠকে দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরমানাথ ক্রিস্টিয়াওয়ান নাসির বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম এই দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায়।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়াতে বাংলাদেশিদের জন্য বালিসহ ইন্দোনেশিয়ার প্রধান পর্যটন এলাকাগুলোতে ভিসামুক্ত ভ্রমণের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, এমন উদ্যোগে দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।

উভয়পক্ষই বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পাশাপাশি শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিনিময়েও সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে সম্মত হয়।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও উঠে আসে।

বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করতে উভয় পক্ষই আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সোমবার (২ জুন) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরমানাথ ক্রিস্টিয়াওয়ান নাসিরের এক বৈঠকে এ আলোচনা হয়।

বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং আঞ্চলিক সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, “ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে আমাদের ধর্মীয়, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক মিল থাকলেও সম্পর্কের গভীরতা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। এখন সময় এসেছে এই সম্পর্ককে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বে রূপ দেওয়ার।”

তিনি বাংলাদেশিদের জন্য ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন গন্তব্যগুলোতে বিশেষ করে বালিতে ভিসামুক্ত ভ্রমণের সুযোগ চালুর প্রস্তাব দেন, যা পারস্পরিক মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতা বাড়াতে সহায়ক হবে।

উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাসির জানান, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষাবৃত্তি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের জন্য ইন্দোনেশিয়ার কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, আসিয়ানের (ASEAN) সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় ইন্দোনেশিয়া সক্রিয়ভাবে সমর্থন দেবে। এ সময় ড. ইউনূস এ সহায়তাকে স্বাগত জানিয়ে আসিয়ানে বাংলাদেশের পূর্ণ সদস্যপদ অর্জনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ইন্দোনেশিয়া এ বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নেবে। জবাবে নাসির জানান, ইন্দোনেশিয়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থানের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এবং মানবিক সমাধানের পক্ষে থেকে কাজ করবে।

ইন্দোনেশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন ইন্দোনেশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ, এবং ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল, উৎপাদন খাত ও জ্বালানি খাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”

এ আলোচনা উভয় দেশের মধ্যে ভবিষ্যতের কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য একটি ইতিবাচক দিক নির্দেশনা দিল বলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
 


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

সর্বশেষ