‘আলোচনার জন্য প্রস্তুত ভারত, দরকার উপযুক্ত পরিবেশ’


বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ভারত প্রস্তুত, তবে এর জন্য ‘উপযুক্ত পরিবেশ’ প্রয়োজন—এ কথা জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
শুক্রবার (২৭ জুন) নিয়মিত সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা বরাবরই প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চেয়েছি। গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নসহ যেকোনো বিষয়েই আলোচনায় বসতে আগ্রহী, তবে সেটি হতে হবে যথাযথ পরিবেশে।”
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত কূটনৈতিক পদ্ধতি আছে, যার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সব দিক মোকাবিলা করা যায়।
তার এ মন্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ভারতের পার্লামেন্টে পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটি ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ’ নিয়ে আলোচনার জন্য ৪ জন বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু জানিয়েছে, এই বিশেষজ্ঞরা হলেন— সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম হাশনাইন, ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিতাভ মাত্তু।
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রণধীর বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচার, সমমর্যাদা এবং পারস্পরিক চাওয়ার ভিত্তিতেই ভারতে সংশোধিত বাণিজ্যিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এসব বিষয়ের সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে ভারত। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আগেও বহুবার গঠনমূলক বৈঠকে আলোচনা করেছি, এমনকি সচিব পর্যায়েও।
নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনার জন্য আমরা প্রস্তুত, যদি তা পারস্পরিক উপকারে উপযোগী পরিবেশে হয়। ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
১৯ জুন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। চীনের কুনমিংয়ে ‘নবম চায়না-সাউথ এশিয়ান এক্সপজিশন অ্যান্ড দ্যা সিক্সথ চায়না-সাউথ এশিয়া কো-অপারেশন’ শীর্ষক বৈঠকের সাইডলাইনে তিন দেশের পররাষ্ট্র সচিবদের ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই ত্রিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আশপাশের অঞ্চলের ঘটনাপ্রবাহে আমরা সবসময় নজর রাখি। কারণ এগুলো আমাদের স্বার্থ ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত। প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, তা আলাদা আলাদা ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ভারতীয় সংসদীয় কমিটির বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষ আলোচনার প্রাথমিক প্রস্তুতিপত্র অনুযায়ী, আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে যে বিষয়গুলোতে মতামত চাওয়া হবে তা হলো— ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় উগ্রপন্থার উত্থান, বাংলাদেশের অস্থিরতা থেকে ভারতের নিরাপত্তা হুমকি এবং ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ-চীনের ‘কৌশলগত সখ্যতা’ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ।
