কোটি টাকার সেতু চলাচলের অনুপযোগী


ময়মনসিংহের গৌরীপুরে কোটি টাকার বেশী ব্যায়ে নির্মিত সেতুটি বর্তমানে চলাচলের অনুপোযোগি। সেতু থাকলেও নেই সংযোগ সড়ক। একপাশে জনগণের তৈরী মাটির সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হয় আর অরেক পাশ দিয়ে লাফিয়ে নামতে হয়। সেই সিঁড়িও তৈরি করেছেন স্থানীয় লোকজন বস্তায় মাটি ভরাট করে। কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন সেতুটি এখন অচল অবস্থায় পড়ে আছে।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের বলুহা গ্রামে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ১কোটি ৫লাখ ৭০হাজার ৪১৬টাকায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় নির্মিত সেতুটি জনমানুষের তেমন কোনো কাজে আসছে না।
উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের বলুহা-শিবপুর সড়কে সেতুটি নির্মাণ করার জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উদ্যোগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে টেন্ডার আহ্বান করে। ময়মনসিংহের মেসার্স বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে ১কোটি ৫লাখ ৭০হাজার ৪১৬টাকার প্রাক্কলিত ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়।
২০২৩ সালের ২০জুন এ কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়। মেয়াদ ছিল ৩১ডিসেম্বর পর্যন্ত। নির্মাণ কাজ শেষ হলেও রাস্তার দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় পুরো সেতুর অখেঁজো হয়ে পড়ে আছে।
শিবপুরের সোহেল রানা বলেন, সেতু তো ঝুলে আছে। কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী।
রামগোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুই আক্তার, আছমা আক্তার, তাসনুভা মেহেরিন জানায়, গত বর্ষা মৌসুমে তাদের নৌকা দিয়েই পারপার করতে হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ব্রিজে ওঠা যায় না।
বলুহা গ্রামের তাইজুল ইসলাম বলেন, আমরা মাছ চাষ করি। রেণু আনা ও গাড়িতে মাছ বিক্রি করতে চরম সমস্যা হচ্ছে।
শিবপুরের আলিম উদ্দিন বলেন, ব্রিজের কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন অসুস্থ মানুষ। অ্যাম্বুলেন্স ও কোনো যানবাহন আসতে না পারায় রোগী নিতে কষ্ট হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হাসান খান জানান, ৭১-এর রণাঙ্গনে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধ করার রণকৌশলের অংশ হিসেবে এ ব্রিজটি তখন উড়িয়ে দেওয়া হয়। ব্রিজটি ৭১-এর স্মৃতি বহন করে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোহাম্মদ আলাল উদ্দিন জানান, দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য গত ২৬জানুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দিয়ে পত্র দেওয়া হয়। সেই তাগিদপত্রে ৭কার্যদিবসের মধ্যে কাজ বিলম্বের কারণ জানাতে বলা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাজ্জাদুল হাসান জানান, জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও কাজ শেষ না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নতুন/কাগজ/সফিক/ময়মনসিংহ
