পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা


পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে একটি স্বাভাবিক ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্পর্ক চায়। তিনি বলেন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে ইতিবাচক কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস' উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘দুই দিনের সফরে আগামী ২৩ আগস্ট ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। ২৪ আগস্ট দুই দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ। একাত্তর ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া এবং পাওনা আদায়ের প্রসঙ্গটি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার টেবিলে থাকবে।’
গত ২৭ ও ২৮ এপ্রিল ঢাকা সফরের কথা ছিল পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। সফরের সব কিছু চূড়ান্তও হয়েছিল। কিন্তু সে সময় ভারতের কাশ্মীরের পাহালগামে এক সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা শুরু হয়। এতে স্থগিত হয় এ সফর। পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সেই সফরে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি সইয়েরও কথাও ছিল।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই বলে অনুষ্ঠানে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজন হলে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত আনতে আন্তর্জাতিক সহায়তা নেওয়া হবে। শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়া প্রশ্নে ভারতের সঙ্গে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি নেই।’
বাংলাদেশি পাসপোর্টের মান কমে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পাসপোর্টের মান কমে যাওয়ার পেছনে আমরা নিজেরাই দায়ী। এমন নিখুঁত কাগজপত্রের নকল আর কোথাও হয় না।’
জঙ্গিবাদ নিয়ে আমেরিকার উদ্বেগ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ।’
অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনার সময়ের দুর্নীতি-ট্যাগের রাজনীতি কি দূর হয়েছে? এর জন্য কি নতুন সংবিধান লাগে না? এর জন্য ভালো মানুষ হতে হয়।’
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি আর জনগণ-মন্ত্রীদের ক্রীতদাস ভাবতেন শেখ হাসিনা। ভোটকারচুপি এরশাদ ও বিএনপির আমলেও হয়েছে, কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলের মতো এত ব্যাপকভাবে হয়নি। শেখ হাসিনা সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘২০১৪ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শ’খানেক মানুষ হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ। ১৫ বছর ভোট দিতে দেয়নি হাসিনা। এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলেও নির্যাতন হয়েছিল, তখন বডি পাওয়া যেতো। কিন্তু হাসিনা তো বডিই গুম করে ফেলতো।’
