‘গুলগুলা’ এখন সারা দেশের ভোজনরসিকদের পছন্দের তালিকায়


এক সময়ের পুরান ঢাকার গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘গুলগুলা’ এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। সহজলভ্য উপকরণে তৈরি এই মিষ্টি ভাজা পিঠা এখন শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশের ভোজনরসিকদের কাছে পরিচিত ও জনপ্রিয় একটি মুখরোচক খাবার।
গুলগুলা মূলত কলা, ময়দা বা চালের গুঁড়া, চিনি বা গুড়, নারকেল, সামান্য লবণ এবং এলাচ গুঁড়ার মিশ্রণে তৈরি হয়। তৈরি মিশ্রণ থেকে ছোট ছোট গোল বল বানিয়ে গরম তেলে ভাজা হয় এই পিঠা। বাইরের দিকটা খাস্তা এবং ভেতরটা থাকে নরম ও সুস্বাদু—আর এখানেই এর অনন্যতা।
পুরান ঢাকায় গুলগুলা শুধু একটি খাবার নয়, এটি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে চলে আসা স্মৃতির অংশ। নানির হাতের গুলগুলা, পারিবারিক অনুষ্ঠানে আপ্যায়নের অন্যতম উপকরণ কিংবা রমজানের ইফতারে এক সময়ের অপরিহার্য খাবার হিসেবে গুলগুলার অবস্থান ছিল অটুট।
বর্তমানে বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্ট, মেলা ও স্ট্রিট ফুড স্টলে গুলগুলা পাওয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ এতে যোগ করেছেন আধুনিক টুইস্ট—চকলেট ফ্লেভার, বাদাম কুচি, এমনকি আইসিং সুগারও। তবে ঐতিহ্যবাহী স্বাদে ভরা পুরান ঢাকার গুলগুলা আজও তার জনপ্রিয়তা হারায়নি।
খাদ্য ঐতিহ্য গবেষকরা মনে করেন, এই ধরনের প্রাচীন ও জনপ্রিয় খাবারগুলোকে নতুন প্রজন্মের মাঝে পরিচিত ও আকর্ষণীয় করে তুলতে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এতে করে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য আবার ফিরে পাবে তার rightful অবস্থান।
গুলগুলা খাওয়া মানেই শৈশবে ফেরা। এটা শুধু একটা খাবার না, এটা আমাদের ঐতিহ্যের অংশ,— বললেন পুরান ঢাকার বাসিন্দা আশরাফ আলী।
বাংলার রান্নার ইতিহাসে গুলগুলার মতো সহজ অথচ স্বাদে পরিপূর্ণ খাবারগুলো আমাদের সংস্কৃতি ও পরিচয়ের গর্ব। এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা এখন সময়ের দাবি।
