বাংলাদেশ দলে খেলতে মুখিয়ে কিউবা মিচেল


বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দলে ধীরে ধীরে জায়গা করে নিচ্ছেন প্রবাসী বংশোদ্ভূত ফুটবলাররা। এখন পর্যন্ত ছয় জন প্রবাসী খেলোয়াড় দেশের হয়ে মাঠে নেমেছেন, যাঁদের শেকড় বাংলাদেশে হলেও ফুটবলীয় বেড়ে ওঠা ইউরোপ কিংবা উত্তর আমেরিকায়। এই তালিকায় রয়েছেন ইংল্যান্ড, ইতালি, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও কানাডা থেকে আসা খেলোয়াড়েরা।
এই ভিন্ন ভিন্ন দেশের ফুটবল দর্শন ও প্রশিক্ষণের ছোঁয়া জাতীয় দলে নতুন গতি এনেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। আধুনিক ফুটবল কৌশল, ফিটনেস এবং পজিশনিংয়ে উন্নতির ছাপ পাওয়া যাচ্ছে ম্যাচে ম্যাচে। যদিও দলগত সাফল্যে এখনো বড় কোনো অর্জন নেই, তবুও মাঠের পারফরম্যান্সে ইতিবাচক পরিবর্তনের আভাস দেখা যাচ্ছে।
ফুটবল ভক্তদের কাছেও এই প্রবাসী ফুটবলাররা হয়ে উঠেছেন এক ধরনের প্রত্যাশার প্রতীক। তরুণরা যেমন তাদের দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছে, তেমনি অভিজ্ঞ কোচরাও পাচ্ছেন নতুন ধরনের পজিশনাল বিকল্প ও কৌশল প্রয়োগের সুযোগ।
জাতীয় দলের ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে মনে করছেন ফুটবল সংশ্লিষ্টরা। তবে একে সফল করতে হলে স্থানীয় ফুটবল অবকাঠামোর উন্নয়ন, ধারাবাহিক অনুশীলন এবং বিদেশি ও স্থানীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে সুসমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে— এমন পরামর্শ দিয়েছেন অনেক ফুটবল বিশ্লেষক।
বাংলাদেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলার সম্ভাবনায় নতুন করে আলোচনায় এসেছেন তরুণ ফুটবলার কিউবা মিচেল। ইংল্যান্ডের সান্দারল্যান্ড ক্লাবের অ্যাকাডেমিতে বেড়ে ওঠা এই ফরোয়ার্ড খেলেছেন ক্লাবটির অনূর্ধ্ব-২১ দলেও। তবে সম্প্রতি সান্দারল্যান্ড থেকে ছাঁটাইয়ের খবরে নতুন ক্লাবের খোঁজে আছেন মিচেল। আর সেই ফাঁকেই তার নজর এখন বাংলাদেশের দিকে।
সান্দারল্যান্ডের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ম্যাকেম নিউজ-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কিউবা মিচেল জানিয়েছেন, জাতীয় দলের হয়ে খেলার ব্যাপারে তিনি আগ্রহী ছিলেন গত মাসেই, কিন্তু সামান্য বিলম্বে কাগজপত্র জমা পড়ায় সেটি সম্ভব হয়নি। ফলে এখন তাকে অপেক্ষা করতে হবে অক্টোবর পর্যন্ত। তবে সে পর্যন্ত তিনি প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চান।
মিচেল বলেন, “জাতীয় দলের হয়ে খেলা আমার মতো তরুণ ফুটবলারের জন্য বড় সম্মান। বাংলাদেশের ফুটবল সংস্কৃতি, ভক্তদের উন্মাদনা আমাকে ভীষণ আকর্ষণ করেছে। এটা জীবনে একবারই আসা এক অভিজ্ঞতা হতে পারে।”
শুধু কথার কথা নয়, মিচেল ইতোমধ্যেই ইংল্যান্ডে জাতীয় দলের আরেক প্রতিনিধি, হামজা চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সান্দারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগে ওঠার প্লে-অফ ম্যাচে যখন হামজা ছিলেন শেফিল্ড ইউনাইটেডের পক্ষে, তখনই তাদের মধ্যে আলাপ হয়। সেখানেই হামজা বাংলাদেশের ফুটবল, পরিবেশ ও সমর্থকদের সম্বন্ধে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
“হামজা আমাকে বলেছে, বাংলাদেশে খেলতে যাওয়ার পর তার জীবনে নতুন একটি দিক খুলে গেছে। সমর্থকরা অনেক আবেগী, ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা প্রবল। আমি দারুণ রোমাঞ্চিত, এটা দেখে আমি কোথায় যেতে পারি।” — বলেন মিচেল।
বর্তমানে ট্রান্সফার উইন্ডোর অপেক্ষায় থাকা এই তরুণ স্ট্রাইকার আশাবাদী, খুব শিগগিরই নতুন ক্লাব এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজের অবস্থান গড়ে তুলতে পারবেন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনও তার বিষয়ে আগ্রহী বলেই জানা গেছে।
বাংলাদেশের হয়ে ইতোমধ্যে খেলেছেন ইংল্যান্ড, কানাডা, ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডের প্রবাসী ফুটবলাররা। কিউবা মিচেল সেই তালিকায় যুক্ত হলে জাতীয় দলের আক্রমণভাগে নতুন গতি আসবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
