শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

শান্ত-মুশফিকের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ

শান্ত-মুশফিকের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

গল টেস্টের প্রথম দিনে শুরুটা ছিল বেশ চাপে বাংলাদেশের জন্য। সকালে প্রথম সেশনেই ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল ব্যাটিং লাইনআপ। মনে হচ্ছিল, ব্যাটারদের জন্য সহায়ক গলের উইকেটে হয়তো প্রত্যাশিত স্কোর গড়তে ব্যর্থ হবে টাইগাররা। তবে লাঞ্চের পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়।

দ্বিতীয় সেশনে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। একদিকে শান্তর দৃঢ়তা, অন্যদিকে মুশফিকের অভিজ্ঞতা—এই জুটিতে চাপ সামলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় বাংলাদেশ। বল ঘোরালেও শ্রীলঙ্কার স্পিনারদের খুব একটা সুযোগ দেননি এ দুই ব্যাটার।

বোলারদের শাসন করে দুজনে গড়েন মূল্যবান জুটি। স্কোরবোর্ডে রানও বাড়তে থাকে নিয়মিতভাবে। এক পর্যায়ে লঙ্কান বোলারদের মনোযোগ ছুটে যায় ব্যাটারদের রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে, কিন্তু শান্ত-রহিম দুজনই দারুণভাবে সেই চাপ সামলে খেলেন বুঝেশুনে।

ফলে দ্বিতীয় সেশনে একটি উইকেটও হারায়নি বাংলাদেশ। প্রথম সেশনের বিপর্যয় সামলে তুলনামূলক নিরাপদ অবস্থানে পৌঁছে যায় দলটি—যার কৃতিত্ব মূলত শান্ত-মুশফিক জুটির নিয়ন্ত্রিত, পরিণত ব্যাটিংকে।
 দিনের দ্বিতীয় সেশন শেষে টাইগাররা তুলনামূলক ভালো অবস্থানে পৌঁছেছে, আর এর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান চতুর্থ উইকেটে গড়া ১৩৭ রানের অপরাজিত জুটির।

চা-বিরতির সময় পর্যন্ত শান্ত ৭০ ও মুশফিক ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। এই জুটি গঠিত হয়েছে প্রথম সেশনের মধ্যভাগ থেকে শুরু করে দ্বিতীয় সেশনের শেষ পর্যন্ত, যেখানে তারা ৩০ ওভার ব্যাট করে কোনও উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশকে যোগ করেন আরও ৯২ রান। সব মিলিয়ে দুই সেশন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১৮২।

এরপর সাদমান ইসলাম ও মুমিনুল হক দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কিছুটা স্থিতি ফেরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা শ্রীলঙ্কার দুইহাতি স্পিনার থারিন্দু রত্নায়েকে ভেঙে দেন সেই জুটি।

১৫তম ওভারের শেষ বলে থারিন্দুর শিকার হন সাদমান। স্লিপে ধরা পড়েন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে, ফিরেন ৫৩ বলে ১৪ রান করে। এর ঠিক পরের ওভারের প্রথম বলেই ফেরেন মুমিনুল। আবারও ধনাঞ্জয়ার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি, ৩৩ বলে ২৯ রানে।

দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৫ রানে দাঁড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড। তখনই চাপের মুখে মাঠে নামেন মুশফিকুর রহিম। তার সঙ্গে জুটি গড়েন শান্ত, যিনি শুরু থেকেই ছিলেন আত্মবিশ্বাসী।

দুই ব্যাটার মিলে ইনিংস গুছিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি রান তোলার কাজও চালিয়ে যান বুঝেশুনে। শান্তর নির্ভরযোগ্য ব্যাটিংয়ের সঙ্গে মুশফিকের অভিজ্ঞতা গলে কঠিন পরিস্থিতিতে হাল ধরতে সাহায্য করে।

ধীরে ধীরে উইকেট পড়ে থাকার আতঙ্ক কেটে যেতে থাকে, আর লঙ্কান বোলারদের ওপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করতে থাকেন তারা। দ্বিতীয় সেশনে কোনও উইকেট না হারিয়ে দলকে পৌঁছে দেন সম্মানজনক অবস্থানে।

দিনের শেষ সেশনে এই জুটি কতদূর যেতে পারে, সেটাই হয়তো ঠিক করবে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের ভবিষ্যৎ। শান্ত ও মুশফিক যদি এমনভাবে চালিয়ে যেতে পারেন, তাহলে বড় স্কোর গড়া সম্ভব—যা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতেও এনে দিতে পারে।

এখন পর্যন্ত এই জুটি বাংলাদেশের ইনিংসে প্রাণ ফিরিয়ে এনেছে, আর সেটিই প্রথম দিনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

সর্বশেষ