পিএসজির দাপুটে জয়, আতলেতিকোর জালে চার গোল


চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি) ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে নিজেদের অভিযানে দারুণ সূচনা করেছে। ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ৪-০ গোলের বিশাল জয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের উপস্থিতি জোরালোভাবে জানান দিয়েছে ফরাসি জায়ান্টরা।
সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত ম্যাচে শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় লুইস এনরিকের শিষ্যরা। পিএসজির আক্রমণভাগ ছিল ধারালো, আর আতলেতিকোর রক্ষণভাগ ছিল প্রায় অপ্রস্তুত। ম্যাচের প্রথমার্ধেই দুই গোল করে এগিয়ে যায় প্যারিসিয়ানরা।
দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে পিএসজি। প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগ না দিয়েই আরও দুটি গোল যোগ করে তারা। দলের পক্ষে গোল করেন ভিটিনহা, উগার্তে, এবং এমবাপে। আরেকটি গোল আসে প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী ভুল থেকে।
এই জয়ে ‘এ’ গ্রুপে শীর্ষস্থান দখল করে নেয় পিএসজি। কোচ লুইস এনরিকে ম্যাচ শেষে বলেন, “আমরা আজ দুর্দান্ত খেলেছি। দল যেমন পরিকল্পনা করেছিল, মাঠে ঠিক তেমনটাই বাস্তবায়ন করেছে।”
অন্যদিকে, আতলেতিকো মাদ্রিদের কোচ দিয়েগো সিমিওনে ম্যাচ শেষে পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “এই হার আমাদের জন্য কঠিন। আমরা নিজেদের ভুলগুলো খুঁজে বের করব এবং ঘুরে দাঁড়াব।”
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে এবারই প্রথমবারের মতো বড় প্রত্যাশা নিয়ে অংশ নিয়েছে পিএসজি। তাদের এমন শক্তিশালী শুরু শিরোপার দৌড়ে নিজেদের অন্যতম দাবিদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
রোববার (স্থানীয় সময়) যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ঐতিহাসিক রোজ বোল স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই ম্যাচে শুরু থেকেই আধিপত্য দেখায় লুইস এনরিকের দল। চ্যাম্পিয়নস লিগের পর এই ম্যাচেও তাদের খেলায় কোনো জড়তা দেখা যায়নি। বরং আরও শানিত হয়ে মাঠে নামে ফরাসি লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়নরা।
ম্যাচের ১৯তম মিনিটে দূরপাল্লার এক চমৎকার শটে গোল করে পিএসজিকে এগিয়ে দেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ফাবিয়ান রুইজ। বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে আতলেতিকোর একটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া হয়—গ্রিজম্যানের ভুলে। সেই সুযোগ থেকেই পাল্টা আক্রমণে ভিতিনহা দ্বিতীয় গোলটি করে পিএসজির লিড ২-০ করে দেন।
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করে আতলেতিকো মাদ্রিদ। ৫৭ মিনিটে হুলিয়ান আলভারেজ একটি গোল করেন বলে মনে হলেও, ভিএআর চেক করে দেখা যায়, গোলের আগে কোকে ফাউল করেছিলেন দেজিয়ের দুয়ে-কে। ফলে সেই গোল বাতিল হয়ে যায় এবং আতলেতিকোর হতাশা আরও বেড়ে যায়।
দলটির দুঃস্বপ্ন তখনো শেষ হয়নি। ডিফেন্ডার ক্লেমেন্ট লেংলে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। এর পরপরই আলেকজান্ডার সোরলোথ একটি নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করেন—প্রায় খালি জালে বল পাঠাতে ব্যর্থ হন তিনি।
৮৭ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় সেনি মায়ুলু দুর্দান্ত এক আক্রমণ থেকে তৃতীয় গোলটি করেন পিএসজির হয়ে। অতিরিক্ত সময়ে লি কাং-ইন পেনাল্টি থেকে গোল করে ৪-০ ব্যবধান নিশ্চিত করেন এবং আতলেতিকোর প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনায় চূড়ান্ত ছেদ টানেন।
এই জয়ের মাধ্যমে পিএসজি ক্লাব বিশ্বকাপের পরবর্তী পর্বে জায়গা পাকা করার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল। পরবর্তী ম্যাচে বৃহস্পতিবার তারা একই ভেন্যুতে মুখোমুখি হবে ব্রাজিলের ক্লাব বোটাফোগোর। অন্যদিকে আতলেতিকো মাদ্রিদ পাড়ি জমাবে সিয়াটলে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ এমএলএসের ক্লাব সিয়াটল সাউন্ডার্স।
