বড় পর্দায় শেষবার? অবসরের আভাস দিলেন আমির খান


একসময় যিনি ছিলেন বলিউডের 'মিস্টার পারফেকশনিস্ট', সেই আমির খান আবারও ফিরছেন বড় পর্দায়। আসছে ২০ জুন মুক্তি পাচ্ছে তার পরবর্তী সিনেমা ‘সিতারে জমিন পার’, যা একাধারে আবেগময় এবং সামাজিক বার্তায় ভরপুর একটি চলচ্চিত্র বলে মনে করছেন সিনেমা বিশ্লেষকরা।
কিন্তু এই প্রত্যাবর্তনের খবরের চেয়েও বড় খবর এসেছে অভিনেতার মুখ থেকেই—‘মহাভারত’ হতে পারে তার জীবনের শেষ সিনেমা।
সম্প্রতি উদ্যোক্তা রাজ শামানির পডকাস্টে হাজির হয়ে এক খোলামেলা আলোচনায় অংশ নেন আমির খান। সেখানেই উঠে আসে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং অভিনয় জীবন থেকে বিদায়ের সম্ভাবনা। অভিনেতা বলেন:
“আমি যখন 'মহাভারত' বানাব, সেটা কেবল একটা সিনেমা হবে না—সেটা হবে আমার সাধনা। আর এটা যদি বানাই, তাহলে সেটাই হতে পারে আমার শেষ কাজ।”
‘সিতারে জমিন পার’ শিরোনাম শুনেই অনেকের মনে পড়ছে আমির খানের আগের ব্লকবাস্টার ‘তারে জমিন পার’-এর কথা। তবে এবারের ছবিটি তার সিক্যুয়েল নয়, বরং ভিন্ন প্রেক্ষাপটে নতুন একটি গল্প। এখানে আমির খান একজন শিক্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, যিনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সঙ্গে কাজ করেন এবং সমাজে অন্তর্ভুক্তির নতুন পথ দেখান।
চলতি মাসের ২০ তারিখে ছবিটি মুক্তি পাবে ভারতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও। আমির খান নিজেই এর প্রযোজক, এবং ছবিটির প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি।
আমির খানের ‘মহাভারত’ নিয়ে জল্পনা অনেক দিনের। শোনা যাচ্ছে, তিনি এই প্রকল্পের জন্য একাধিক বছর গবেষণা করেছেন এবং এক বিশাল ব্যয়বহুল ও মাল্টি-সিজন ফ্র্যাঞ্চাইজি তৈরির পরিকল্পনা করেছেন, যেটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও আসতে পারে।
তিনি বলেন,
“এই মহাগ্রন্থকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে গেলে এর প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা থাকা দরকার। আমি চাই না একে শুধুই সিনেমা বানিয়ে ছেড়ে দিই। আমি এর ভেতরে ডুব দিতে চাই।”
‘মহাভারত’ নির্মাণের প্রাক-প্রস্তুতি হিসেবে ইতোমধ্যেই চিত্রনাট্যের কাজ শুরু হয়েছে। সম্ভাব্য কাস্টিং নিয়েও বলিউডে গুঞ্জন চলছে—যেখানে আমির নিজে কৃষ্ণ বা অর্জুন চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন।
আমির খানের মতো একজন অভিনেতার মুখে “এটাই হতে পারে শেষ কাজ”—এই কথা ভক্তদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। কেউ ভাবছেন এটি তার দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ, আবার কেউ মনে করছেন এটি তার নিজের জীবনের ‘ফাইনাল চ্যাপ্টার’ লিখে নেওয়ার এক আবেগময় সিদ্ধান্ত।
তবে একথা নিশ্চিত—‘মহাভারত’ যদি হয় তার বিদায়ী প্রজেক্ট, তবে সেটি হবে চিরস্মরণীয় এক বিদায়।
বহুবার সিনেমার নিয়ম ভেঙে নতুন করে পথ দেখিয়েছেন আমির খান। সমাজ, পরিবার ও দর্শকের মাঝে তার সিনেমা যেমন চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে, তেমনই আবেগের জায়গা থেকেও ছুঁয়ে গেছে কোটি মানুষকে। এবার হয়তো সেই গল্পের এক নতুন মোড় নিতে চলেছে—যেখানে মহাকাব্যের মাধ্যমে শেষ হতে পারে তার কিংবদন্তিতুল্য চলচ্চিত্র-যাত্রা।
