শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

গুইমারায় রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

গুইমারায় রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের বাস্তবায়নে গুইমারা উপজেলার রেম্রাপাড়া এলাকায় প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন একটি গ্রামীণ রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, রাস্তার নির্মাণকাজে বালুর পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে পাহাড়ের মাটি এবং নিম্নমানের ইট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সড়কটি।

জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আওতায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ “গ্রামীণ মাটির রাস্তা টেকসইকরণ (এইচবিবি)” প্রকল্পের অধীনে এই নির্মাণকাজ শুরু করে। প্রকল্পের আওতায় ৩নং হাফছড়ি ইউনিয়নের মরার দোকান থেকে ছোট পিলাক পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কের এইচবিবিকরণ কাজ চলছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গুইমারা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে রেম্রাপাড়া এলাকায় রাস্তার কাজে নিচের স্তরে ব্যবহার করা হচ্ছে ২ নম্বর (নিম্নমানের) ইট এবং উপরের স্তরে এক নম্বর ইট। তবে প্রকৃতপক্ষে ইটগুলোর মান আরও নিচু বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ছাড়া রাস্তার বালুর স্তরের জায়গায় ব্যবহার করা হচ্ছে পাশের পাহাড়ের মাটি।

নির্মাণকাজে নিয়োজিত এক শ্রমিক জানান, "আমাদের যা দেওয়া হয়েছে, তাই দিয়ে কাজ করছি।"

ইতোমধ্যে রাস্তার অর্ধেকেরও বেশি কাজ শেষ হয়ে গেছে। তবে রাস্তার মজবুতকরণের জন্য বালু ব্যবহারের কথা থাকলেও সেখানে মাটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বর্ষাকালে ধুয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ইউপিডিএফ কর্মী দুর্জয় চাকমা বলেন, “এটি বহুদিনের পুরনো মাটির রাস্তা ছিল। বর্তমানে যেভাবে নির্মাণ কাজ চলছে, তাতে রাস্তার স্থায়িত্ব নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে। পুরো রাস্তায় ব্যবহৃত হচ্ছে পাহাড়ের মাটি ও নিম্নমানের ইট।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ম্রাসাজাই মারমা বলেন, “নেতা কাজ করাচ্ছেন”—এর বাইরে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গুইমারা উপজেলা মারমা ঐক্য পরিষদের সভাপতি অংগ্য মারমা জানান, “এই প্রকল্পের সঙ্গে আমাদের উপজেলা কমিটির কেউ জড়িত নয়। তবে যদি কেউ মারমা ঐক্য পরিষদের নাম ব্যবহার করে অনিয়ম করছে, সেটি অবশ্যই অনুচিত।”

জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জেলা পরিষদের ক্যাশিয়ার এবং মারমা ঐক্য পরিষদের নেতা ম্রাসাথোয়াই মারমার শ্যালক অংলাপ্রু মারমা। তবে অনেক চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

মারমা ঐক্য পরিষদের জেলা সভাপতি ম্রাসাথোয়াই মারমার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “আমি ব্যস্ত, পরে জেলা পরিষদে এসে দেখা করুন।”

নিম্নমানের ইট, বালি না দেওয়া, বক্স না করে সরাসরি মাটির ওপর ইট বিছানোর বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চিফ ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সহকারী প্রকৌশলী জামির হোসেন জানান, তিনি বর্তমানে ওমরাহ হজ পালনে দেশের বাইরে আছেন, দেশে ফিরে বিস্তারিত জানাতে পারবেন।


নতুন/কাগজ/রিপন/খাগড়াছড়ি
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

সর্বশেষ

আরও পড়ুন