মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
মিঠাপুকুরে সন্তানের বিরুদ্ধে

মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ

মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

রংপুরের মিঠাপুকুরে বীর মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সন্তানের বিরুদ্ধে। এমনকি তার চেক বই কেড়ে নিয়ে ব্যাংকে জমানো সমস্ত টাকা উত্তলন করেছেন অভিযুক্ত ছেলে। পুত্রবধু এবং ছেলের মারধরের ভয়ে তিনমাস থেকে বাড়ি ছাড়া ওই বৃদ্ধা। 

ওই বৃদ্ধার অভিযোগ - মিঠাপুকুর উপজেলার ০৭ নং লতিবপুর ইউনিয়নের লতিবপুর (বউবাজার) গ্রামের মৃত-বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর স্ত্রী সহিদা বেওয়া (৭০)। তার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলী মারা গেলে মুক্তিযোদ্ধার মাসিক ভাতা তিনি পেতেন। এককালীন দশলাখ টাকা ব্যাংক ঋন করলে তিনি ছেলেমেয়েদের ভাগ করে দিয়ে দু'লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। কিন্তু বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম তিনলক্ষ টাকা নেওয়ার পরও ব্যাংকে সহিদা বেওয়ার জমানো দুলক্ষ টাকা উত্তলনের জন্য চাপ দিতেন এবং মারধর করতেন। পরে সহিদুল ইসলাম চেক কেড়ে নিয়ে টাকা উত্তলন করেন।


ব্যাংক ঋনের টাকা প্রতিমাস ১২০০০ টাকা কেটে নেওয়ার পর প্রতিমাসে তিনি আট হাজার টাকা পেতেন। কিন্তু সে টাকাও সহিদুল ইসলাম একাই ভোগ করতেন। গত ১২ ডিসেম্বর সহিদুল মাসিক সম্মানি ভাতা তুলতে শহিদা বেওয়াকে নিয়ে ব্যাংকে গেলে সহিদা বেওয়া ব্যাংক ম্যানেজারকে অভিযোগ করায়,শহিদুল তাঁকে জনসম্মুখে ব্যাংকের নীচে মারধর করে এবং বাড়িতে নিয়ে এসে তার স্ত্রী এবং সন্তানকে দিয়ে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর স্থানীয়রা শহিদা বেওয়ার শারিরীক অবস্থা খারাপ দেখে একই ইউনিয়নে বসবাসরত তার মেয়ে ফেন্সি বেগমের বাড়িতে পাঠান।


শুক্রবার (৯-ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ১০ ঘটিকার সময় দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে এবং শহিদা বেওয়ার রোগ বেড়ে যাওয়ায় মেয়ে ফেন্সি বেগম তার চিকিৎসার জন্য স্হানীয় জনপ্রতিনিধি এবং স্বজনদের নিয়ে ওই বৃদ্ধার স্বামীর বাড়িতে গেলে ছেলে শহিদুল উত্তেজিত হয়ে তার মা এবং বোন ফেন্সি বেগমকে বেধড়ক পেটায়। এসময় তার স্বামী মুক্তিযোদ্ধার নিজ বাড়িতে তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শত চেষ্টা করেও শহিদুলকে স্হানীয়রা বোঝাতে পারেননি। পরে তাদের উদ্ধার করে নিকটস্থ চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়।

বৃদ্ধার দাবি- শেষ বয়সে ছেলের অত্যাচারে তার জীবন অতিষ্ঠ। লোভী ছেলে এবং পুত্রবধু কোনো কারণ ছাড়াই তাকে মারধর করেন। তার ভরনপোষণ না করে বরং মুক্তিযোদ্ধা ভাতার সম্মানীও খেয়ে ফেলেন। মানসিক আর শারিরীক যন্ত্রণা নিয়ে তিনি ভেঙ্গে পড়েছেন। এসময় ছেলের নির্যাতনের বর্ননা দিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে তিনি শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত এবং জখমের চিহ্ন দেখান।


এ বিষয়ে ওই বৃদ্ধা মিঠাপুকুর থানায় একটি লেখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন । কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বাদী হয়ে তার ছেলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এসআই- জব্বার সেখানে গিয়েছিলেন। একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও অভিযুক্তের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন