মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, সাগরিকার চার গোলের প্রতিশোধ বিমান বিধ্বস্ত: নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের সন্ধানে জরুরি যোগাযোগ নম্বর চলতি সপ্তাহে শেষ হতে পারে সংসদীয় সীমানা নির্ধারণের কাজ দুর্নীতি-অনিয়মে ডুবেছেন গণপূর্তের প্রকৌশলী ময়নুল যারা নির্বাচন চায় না তাদের রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন নেই: আমীর খসরু ৬ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৬৪ জন: আইএসপিআর মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত, হতাহতের ঘটনায় রাষ্ট্রপতির শোক ও সমবেদনা বিমান বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে দাঁড়াল ১৯ জনে উত্তরায় স্কুল ভবনে বিমান বিধ্বস্ত, মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা বিমান বিধ্বস্তের সময় ক্লাস চলছিল জুনিয়র শিক্ষার্থীদের
  • চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের টাকায় নয়ছয়

    চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের টাকায় নয়ছয়
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় চা শ্রমিকদের জন্য সরকার কর্তৃক জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

    প্রকল্পটির আওতায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে জনপ্রতি ৬ হাজার টাকা করে বিকাশের মাধ্যমে ৭ হাজার চা শ্রমিকের মাঝে অর্থ বিতরণ করার কথা হলেও অনেক প্রকৃত শ্রমিক এই সহায়তা পাননি, বরং একাধিক ক্ষেত্রে এক পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে টাকা উত্তোলনের ঘটনা সামনে উঠে এসেছে।

    জানা গেছে, উপজেলার ২২টি চা বাগানের পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও বিকাশ নম্বর সংগ্রহ করে সমাজসেবা অফিসে তালিকা জমা দেন। তবে অভিযোগ উঠেছে, ওই তালিকায় অনেকেই তাদের পরিবারের স্বামী, স্ত্রী, সন্তান, এমনকি আত্মীয়স্বজনদের নাম সযুক্ত করেছেন। আবার প্রকৃত অনেক শ্রমিকের নাম ও বিকাশ নম্বর তালিকায় থাকা সত্ত্বেও তারা কোনো টাকা এখন ও পাননি।

    শ্রমিকদের অভিযোগ, তালিকায় থাকা সত্ত্বেও অনেকের বিকাশ নম্বর পরিবর্তন করে অন্যদের নম্বরে টাকা পাঠানো হয়েছে। এমনকি এক ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ব্যবহার করে পঞ্চায়েত নেতার ছেলের বিকাশে টাকা পাঠানোরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অনিয়মের প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ চা শ্রমিকরা রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। একই দিন শমশেরনগর বাগানের নারী শ্রমিক সবিতা রেলী বাগানের নেতা গোপাল কানুর বিরুদ্ধে থানায় টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেন।

    শ্রমিক গোপাল গোয়ালা, রিশু বাগতি, নিলু রাজভর, জগদীশ বাউরী, বাবুল রেলী জানান, ‘‘আমাদের ভোটার আইডি নিয়ে দুর্নীতি পরায়ণ কিছু নেতা টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমরা ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’’

    শ্রমিক রামাকান্ত যাদব বলেন,“তালিকায় আমার নাম ও আইডি নম্বর থাকা সত্ত্বেও আমি টাকা পাইনি। বিকাশ নম্বর আমার নয়।’’ শ্রমিক পারতালি তেলেঙ্গা, দুলাল শীল, প্রিতী পালসহ আরও অনেকেই একই অভিযোগ তুলেন।

    ভজনটিলার শ্রমিক শিমুল লোহার জানান, “আমার মোবাইলে অন্যের নামে টাকা আসে। পাশের বাড়ির জয়প্রকাশ রাজভর এসে টাকা তুলে এবং আমাকে ২ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা নিয়ে যায়।” ছবি লোহার বলেন, “আমার আইডির নামে ও টাকা ঢুকে নির্মল ছত্রির বিকাশে। পরে সে আমাকে ৪ হাজার টাকা দেয়।”

    অনুসন্ধানের তথ্যনুসারে জানা যায়, উপকারভোগী তালিকায় শমশেরনগর চা বাগানের নেতা নির্মল দাস পাইনকা, তার স্ত্রী, মেয়ে, ভাইয়ের স্ত্রী ও কন্যাদের নাম রয়েছে।

    একইভাবে পঞ্চায়েত সম্পাদক শ্রীকান্ত কানুর স্ত্রী, ভাই-বোন ও আত্মীয়দের নামও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

    জবাবে শ্রীকান্ত কানু বলেন, “তালিকা অনেকে দিয়েছেন। যার নাম্বার তার নাম্বারে টাকা এসেছে। আমার পরিবারে দু’জনের নাম এসেছে, ভাইয়েরা আলাদা পরিবার।”

    চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালী ইউনিয়ন কমিটির সম্পাদক নির্মল দাস বলেন, “আমি অসুস্থ ছিলাম, তাই তালিকায় নাম দেওয়া হয়েছে। আমি দুঃখিত।”

    কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ইউসুফ মিয়া বলেন,‘‘অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

    এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন,‘‘এরকম ঘটনা ঘটতে পারে, সে কারণে আগেই সতর্ক করেছিলাম। সমাজসেবা অফিসারকে অবহিত করেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আস্বস্ত করেন।’’


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন