মিষ্টি ছাড়াও হতে পারে ডায়াবেটিস—এই উপসর্গগুলো জানেন কি?


অনেকেরই ভুল ধারণা, শুধু মিষ্টি খেলেই ডায়াবেটিস হয়। বাস্তবে, অনিয়মিত জীবনযাপন, অতিরিক্ত স্ট্রেস, ওজন বেড়ে যাওয়া ও বংশগত কারণেও ডায়াবেটিস হতে পারে। এমনকি যারা চিনি খান না, তারাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। ডায়াবেটিসের আগে আসে ‘প্রি-ডায়াবেটিস’ পর্যায়, যেটি সময়মতো শনাক্ত করতে পারলে মূল রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।
শরীরে ডায়াবেটিস লুকিয়ে থাকলে ৬ লক্ষণ দেখা যাবে। প্রি-ডায়াবেটিসের লক্ষণ কী এবং কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়, জেনে নিন। ডায়াবেটিস হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। কিন্তু ডায়াবেটিস হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়, এই অবস্থা ডায়াবেটিসের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির কারণ। যদি এর লক্ষণগুলো (প্রি-ডায়াবেটিসের লক্ষণ) সময়মতো শনাক্ত করা যায় এবং চিকিৎসা করা হয়, তাহলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।
প্রি-ডায়াবেটিসের ৬টি সাধারণ লক্ষণ:
১. হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া
২. সব সময় ক্লান্ত লাগা ও ঘুম ঘুম ভাব
৩. ক্ষুধা বা তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া
৪. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, বিশেষ করে রাতে
৫. ক্ষত ধীরে সারানো
৬. চোখ ঝাপসা দেখা
প্রি-ডায়াবেটিসের কারণ
- অতিরিক্ত ওজন: অতিরিক্ত ওজন শরীরকে কার্যকরভাবে ইনসুলিন ব্যবহার করতে বাধা দেয়।
- শারীরিক কার্যকলাপের অভাব: নিয়মিত ব্যায়াম না করলে শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
- জেনেটিক ফ্যাক্টর: যদি পরিবারের কারো ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
- বয়স: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রি-ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন
প্রি-ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যেতে পারে অথবা এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কমানো যেতে পারে। এর জন্য কিছু বিষয়ের যত্ন নিতে হবে। যেমন:
- ওজন: যদি ওজন বেশি হয়, তাহলে ওজন কমানো প্রি-ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে।
- নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট শারীরিক পরিশ্রম করলে শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে।
- স্বাস্থ্যকর খাবার: ফলমূল, শাক-সবজি, গোটা শস্য এবং কম চর্বি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান।
- চিনি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট: চিনি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট যুক্ত খাবার কম খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- ধূমপান: ধূমপান ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
- মানসিক চাপ: মানসিক চাপ রক্তে শর্করার মাত্রাকেও প্রভাবিত করে। তাই মানসিক চাপ কমাতে যোগব্যায়াম, ধ্যান বা অন্যান্য কৌশলের সাহায্য নিন।
এই উপসর্গগুলো থাকলে দেরি না করে রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করানো উচিত। প্রি-ডায়াবেটিস ধরা পড়লে নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাবার, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
দৈএনকে/জে .আ
