কালুরঘাট সেতুতে ট্রেন থামেনি, থেমে গেল ছোট্ট আয়েশার জীবন

চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতুতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে মাত্র দুই বছরের শিশু আয়েশা। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে অটোরিকশায় করে যাওয়ার সময় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় নিহত হয় সে।
পরিবারের সঙ্গে অটোরিকশায় থাকা আয়েশা বোয়ালখালী প্রান্তের কালুরঘাট সেতুতে দুর্ঘটনার শিকার হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, একটি গাড়ি সেতুর ওপর নষ্ট হয়ে পড়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়। ওই সময় ট্রেনটি লাল সিগন্যাল এবং গার্ডের লাল পতাকা উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে সেতুতে উঠে পড়ে। একে একে অটোরিকশা, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি যানবাহনকে ধাক্কা দেয় ট্রেনটি।
দুর্ঘটনায় আয়েশাসহ মোট তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন। নিহত অন্য দুইজন হলেন মোহাম্মদ তুষার এবং এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি। আহতরা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতদের মধ্যে পরিচিতরা হলেন, আসিফ উদ্দিন বাপ্পি, আসমা আহমেদ ও আঞ্জু আরা।
শিশু আয়েশার বাবা সাজ্জাদ নূর মিঠু বলেন, আমি জানি না কার গাফিলতিতে এই দুর্ঘটনা। তবে কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না। আমার একমাত্র মেয়েটাকে হারিয়ে আমি নিঃশেষ। আমার আর কিছু চাওয়ার নেই—এই সেতু দিয়ে যেন আর কোনও ট্রেন না চলে।
জালানিহাট স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন জানান, রাত ১০টা ১০ মিনিটে ট্রেনটি সেতুর অদূরে পৌঁছায়। তখনই লাল সিগন্যাল দেওয়া হয় এবং গার্ডও লাল পতাকা প্রদর্শন করেন। কিন্তু চালক সেই নির্দেশনা মানেননি। অথচ এই সেতু ‘ডেড স্টপেজ’ হিসেবে চিহ্নিত, যেখানে ট্রেন থামিয়ে ধীরে সেতুতে উঠার নিয়ম রয়েছে।
এ দুর্ঘটনা শুধু এক শিশুর নয়, পুরো পরিবারের জীবনে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করেছে। দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে এমন ঘটনা যে আরও ঘটবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।