টেকসই ও সবুজ প্রকল্পে বিনিয়োগে ঊর্ধ্বগতি, তিন মাসে বেড়েছে ১,৮২২ কোটি টাকা


জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় টেকসই ও পরিবেশবান্ধব খাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকে এসব প্রকল্পে নতুন করে বিনিয়োগ বেড়েছে ১,৮২২ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে টেকসই ও সবুজ প্রকল্পে মোট বিনিয়োগ ছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের মার্চ শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৮২ কোটি ৫২ লাখ টাকায়।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, শুধু টেকসই প্রকল্পেই মার্চ প্রান্তিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত অর্থায়ন হয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা, যা আগের প্রান্তিকে ছিল ১ লাখ ৪৮ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে এ খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে ১,৭০৪ কোটি টাকা।
এই সময়ে ব্যাংকগুলো এককভাবে টেকসই প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৫১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করেছে ২,৯৬৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স পলিসি’ অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ১১টি ক্যাটাগরির আওতায় ৬৮টি পণ্যে ঋণ দিতে পারে, যার অধিকাংশই সবুজ অর্থায়নের আওতায় পড়ে। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে কৃষি, সিএমএসএমই, পরিবেশবান্ধব কারখানা, সৌরবিদ্যুৎ, বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি), এবং পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদন।
সবুজ প্রকল্পেও বিনিয়োগে সামান্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে যেখানে মোট বিনিয়োগ ছিল ৮,৬৪৫ কোটি টাকা, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮,৭৬৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকায়, প্রবৃদ্ধি ১১৮ কোটি টাকা।
তবে টেকসই কৃষি খাতে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। ডিসেম্বর শেষে যেখানে এই খাতে অর্থায়ন ছিল ৮,৭৩১ কোটি টাকা, মার্চ শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭,৯২৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এ খাতে ৮০৭ কোটি টাকার বিনিয়োগ কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবছর টেকসই অর্থায়নে উৎসাহ দিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ‘সাসটেইনেবল রেটিং’ চালু রেখেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জলবায়ু সহনশীলতা ও সবুজ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে এই ধারাকে আরও জোরদার করতে হবে।
