নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন ভারত

নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ল ভারত। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট জিতেছে হরমনপ্রীত কৌরের নেতৃত্বাধীন দলটি।
রোববার (২ নভেম্বর) নভি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে পরাজিত করে শিরোপা জিতে নেয় ভারতীয় নারী দল।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৪৬ রান তোলে। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯৪ রানে গুটিয়ে যায়। ভারতের পক্ষে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর। ব্যাট হাতে ৭৮ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নেন ২ উইকেট।
এই জয়ে প্রথমবারের মতো নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। এর আগে ২০০৫ ও ২০১৭ সালে তারা রানারআপ হয়েছিল।
ফাইনালে অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন হরমনপ্রীত কৌর। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, “এটি শুধু একটি জয় নয়, আমাদের বছরের পর বছর পরিশ্রমের ফল। দেশের কোটি ভক্তদের এই জয় উৎসর্গ করছি।”
এই জয়ের মধ্য দিয়ে নারী ক্রিকেটে ভারতের নতুন যুগের সূচনা হলো বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।
এই শিরোপা জয়ের মাধ্যমে তারা পেল রেকর্ড পরিমাণ প্রাইজমানি। সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে আইসিসি মোট ১৩.৮৮ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫৩ কোটি টাকা) পুরস্কার রেখেছিল, যা ২০২৩ সালের পুরুষদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের মোট পুরস্কারের (১০ মিলিয়ন ডলার) চেয়েও বেশি।
এবারের আসরে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবে ভারত একাই পেয়েছে ৪৪ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, এই পুরস্কার ২০২২ সালের নারী বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নের প্রাপ্তি (১.৩২ মিলিয়ন ডলার) থেকে প্রায় ২৩৯ শতাংশ বেশি। এমনকি, ২০২৩ সালে পুরুষদের বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া পেয়েছিল ৪ মিলিয়ন ডলার, যা এবার নারী ক্রিকেটের পুরস্কারের কাছে ম্লান হয়ে গিয়েছে।
ফাইনালে হেরে রানার্স-আপ হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা পেয়েছে চ্যাম্পিয়ন দলের ঠিক অর্ধেক, ২২ লাখ ৪০ হাজার ডলার (প্রায় ২৫ কোটি টাকা)। সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া দলগুলো ১.১২ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে।
এ ছাড়া পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে দুই দল ৭ লাখ ডলার করে আর সপ্তম ও অষ্টম স্থানে থাকা দুই দল ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার করে পাচ্ছে। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া আট দলই অংশগ্রহণ ফি হিসেবে পাবে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার, সঙ্গে প্রতিটি গ্রুপপর্ব জয়ের জন্য অতিরিক্ত ৩৪ হাজার ৩১৪ ডলার করে।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী আট দলের জন্যই পুরস্কার অর্থ নির্ধারিত ছিল। লিগ পর্বে ৩ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে থাকা বাংলাদেশ পাচ্ছে ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এছাড়াও, পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি জয় থেকে অতিরিক্ত ৩৪ হাজার ৩১৪ ডলার পেয়েছে তারা। সব মিলিয়ে এবারের নারী বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশ মোট ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৩১৪ ডলার (প্রায় ৬ কোটি ৯০ লাখ ২৭ হাজার টাকা) অর্জন করেছে।