সোনারগাঁ জি.আর. ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজে মাদকের ভয়াল থাবা


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জি.আর. ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এখন মাদকের করাল গ্রাসে বিপর্যস্ত। ১২৫ বছরের পুরনো এ বিদ্যাপীঠে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রীদের ওয়াশরুমে ইয়াবা সেবনের সময় বিস্ফোরণ ঘটে, এতে দুজন গুরুতর আহত হন।
ঘটনাটি ঘটে ২৫ জুন (মঙ্গলবার) রাত ৯টার দিকে। অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরীর সহযোগিতায় ওই দুই মাদকসেবী ভিতরে প্রবেশ করে। বিস্ফোরণের শব্দে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে আহতদের স্কুলের পেছনে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং একজন পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর ছাত্রীদের ওয়াশরুমে ইয়াবা ট্যাবলেট, ম্যাচ, পেট্রোল, ভাঙা ফ্যানের মোটর এবং নগদ টাকার আলামত পাওয়া যায়। দেয়ালে ফাটলও দেখা গেছে, যা ভবিষ্যতে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। এটি ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ ছিল কিনা, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। জানা যায়, আহতরা বিদ্যালয়ের পাশের গ্রামের বাসিন্দা এবং বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
এদিকে ২৬ জুন ভোরে স্কুল ভবনের ৭টি থাই গ্লাস চুরি হলেও প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। এ ঘটনায় ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বলা হলেও, সভাপতি তুহিন মাহমুদ সদস্যদের পুরো নাম জানাতে পারেননি এবং প্রতিবেদনটি স্বাক্ষরবিহীন ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাংবাদিকদের রিপোর্টের অনুলিপি বা থানায় অভিযোগপত্র চাইলে অধ্যক্ষ ও কমিটির সদস্যরা অস্বীকৃতি জানান। জানা গেছে, মাদক সংক্রান্ত ঘটনায় থানায় মৌখিক অভিযোগ করা হলেও, চুরির বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্তমান সভাপতি (এনসিপি নেতা) তুহিন মাহমুদ কার্যত বিদ্যালয়ের কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন না। তিনি আগে শিক্ষক ছিলেন, এখন রাজনৈতিক পরিচয়ে সভাপতির দায়িত্বে থাকলেও ছাত্র-অভিভাবকদের সাথে তার কোনো যোগাযোগ নেই।
পৌরসভার প্রশাসক মো. জাইদুল ইসলাম মিঞা ২৯ জুন বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে গেলেও কোনো খোঁজ নেননি বলে অভিযোগ আছে। এছাড়া স্কুলের বকেয়া পৌরকর পরিশোধে কোনো উদ্যোগ নেই বলেও অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পুনরুদ্ধারে স্থানীয় গুণী ও শিক্ষানুরাগী নাগরিকদের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল।
