সতীর্থদের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন হামজা

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার হামজা চৌধুরী তার জীবনে একাধিকবার বাংলাদেশে এসেছেন, কিন্তু গত মার্চে আসাটা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতা। এবার তিনি এসেছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলার জন্য—যা তাকে নতুনভাবে পরিচিত করে তোলে দেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে।
তার আগমনের পর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনার ঝড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সংবাদমাধ্যম—সব জায়গায় হামজা হয়ে ওঠেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এক রাতেই যেন তিনি হয়ে যান বাংলাদেশ ফুটবলের নতুন মুখ, নতুন আশার প্রতীক।
যদিও মাঠের ফলাফল তেমন অনুকূলে আসেনি, তবুও হামজার উপস্থিতি দেশের ফুটবলে এনেছে নতুন জৌলুস ও প্রাণচাঞ্চল্য। জাতীয় দলের অনুশীলনে তার প্রতিটি পদক্ষেপ এখন নজর কাড়ে সবার। তরুণ খেলোয়াড়দের কাছেও তিনি অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
বাংলাদেশ ফুটবলের প্রতি হামজার আগ্রহ এবং অঙ্গীকার ফুটবল অঙ্গনে নতুন উদ্দীপনা যোগ করেছে। অনেকেই আশা করছেন, তার নেতৃত্ব ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের ফুটবলে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
গতকাল সকালে ঢাকায় এসেছেন হামজা। বিমানবন্দর থেকে হোটেলে আসেন। বিকালেই অনুশীলনে নেমে পড়েন। ক্লান্তি নেই। অনেক ফুটবলার থাকেন ক্লান্তি কাটাতে সময় নেন। কিন্তু হামজা যেন ভিন্ন এক মানুষ। দীর্ঘ আকাশ পথ পাড়ি দিয়ে বিশ্রাম না নিয়ে কীভাবে মাঠে অনুশীলনে নেমে পড়েন, তা অনেকের কাছে বিস্ময়ের।
হামজা চৌধুরী থাকলে তাকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমও বেশ সজাগ থাকে। প্রথম দিন অনুশীলন করতে নামার আগে হামজা কথা বলবেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে। এমনটাই আশা করেছিল সংবাদমাধ্যম। হামজা কথা বললে সেটি অধিকতর গুরুত্ব পায়। কিন্তু বাফুফে হামজাকে আড়ালে পাঠিয়ে দিল। বাফুফে নিজেদের গুরুত্ব বুঝলো না। ফুটবলের আলোচনা থেকে সরিয়ে নিলো।
অনুশীলনে প্রতিদিন খেলোয়াড়রা ড্রেসিং রুম থেকে বেরিয়ে বাম দিক দিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন। গতকালও সেটি হতে যাচ্ছিল। সংবাদমাধ্যমও দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ঘটলো তার উলটো। সবাইকে ডজ দিয়ে ডান দিকের বদলে সব খেলোয়াড়কে বাম দিক দিয়ে অনুশীলন মাঠে পাঠানো হলো। কিন্তু কেন এমন আচরণ, সেই প্রশ্নের জবাব নেই।
সাংবাদিকরা বলছেন, পুরো দল অনুশীলনে নেমেছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ-হংকং ম্যাচ। হাতে আছে দুই দিন। হামজা চলে এসেছেন, স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি আকর্ষণ থাকবে। কিন্তু বাফুফে হতে বলা হলো, কেউ কথা বলবেন না। হামজাও কথা বলবেন না। অথচ হামজা ফটো সাংবাদিকদের ডাকে এগিয়ে আসতে গিয়েও থেমে যান। ফিরে যান মাঠে। হামজা ভদ্র, অমায়িক। বড়দেরকে শ্রদ্ধা করেন। তার ভেতরে মেনে চলার প্রবণতা খুব বেশি দেখা যায়।
কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবল আঙিনায় আসলে অদৃশ্য কারণে তিনি বাধা পড়ে যান। সাংবাদিকরা বলাবলি করলেন, ফুটবলের এই সময় কী কারণে হামজাকে নিয়ে বাফুফের এত লুকোচুরি, তা বুঝা গেল না। সীমাবদ্ধ মানসিকতায় বুঝলো না, বাফুফে। সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে কীভাবে আদায় করতে হয়।