রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
Natun Kagoj

বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ৪.৮% হতে পারে: বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ৪.৮% হতে পারে: বিশ্বব্যাংক
ছবি: সংগৃহীত
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সময়োপযোগী অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। চলতি অর্থবছরে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বৃদ্ধি পাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রায় ৪.৮ শতাংশ হতে পারে, যা গত অর্থবছরের ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি।

বিশ্বব্যাংক আরও পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরও ত্বরান্বিত হয়ে ৬.৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে বিনিয়োগ, উৎপাদন খাতের উন্নয়ন, বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক নিরাপত্তা নীতিতে সময়োপযোগী সংস্কারের বিকল্প নেই।

বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, শুধু সংখ্যাগত বৃদ্ধি নয়, বরং জনগণকে সমানভাবে সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়াই হবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চ্যালেঞ্জ। তাই সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও সমাজের সব স্তরের সহযোগিতা জরুরি।

মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) সংস্থাটির ঢাকা অফিসে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনীতির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও মধ্যমেয়াদি প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি টিকিয়ে রাখতে সময়োপযোগী সংস্কারের প্রয়োজন। চলতি অর্থ বছরের প্রথমার্ধে কিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের পর অর্থনীতি দ্বিতীয়ার্ধে পুনরায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে। রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি রেমিট্যান্স প্রবাহ ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ায় অর্থনীতিতে ইতিবাচক গতি এসেছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যমেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে স্থায়ী প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান—বিশেষত তরুণ ও নারীদের জন্য—নিশ্চিত করতে কার্যকর ও সময়োপযোগী সংস্কার অপরিহার্য। পাশাপাশি বাইরের চাপ ও আর্থিক ঝুঁকিও রয়ে গেছে। বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু হলেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখনও চাপের মধ্যে রয়েছে। খাদ্য ও জ্বালানি মূল্যের স্ফীতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে আর্থিক ঘাটতি বেড়ে গেছে এবং কর রাজস্ব দুর্বল রয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে, ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ হার ৬৯ শতাংশ থেকে কমে ৫৮.৯ শতাংশে নেমেছে। নতুন কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ২৪ লাখ নারী শ্রমবাজারের বাইরে রয়েছেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেম বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতি দৃঢ়তা দেখিয়েছে, তবে এই স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সংস্কার অপরিহার্য। রাজস্ব বৃদ্ধি, জ্বালানি ভর্তুকি হ্রাস, নগরায়ন ও বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করার পাশাপাশি আরও বেশি এবং ভালো কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে।”

বিশ্বব্যাংক আশা করছে, যদি সময়োপযোগী সংস্কার ও নীতি গ্রহণ করা হয়, তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম হবে।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন